দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে মুজিববর্ষের বাড়ি নিয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে।  

রোববার দুপুরে চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে এসব অভিযোগ উত্থাপন করে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছেন ওই এলাকার অর্ধ শতাধিক নারী ও পুরুষ। 

আইয়ুব আলী চিরিরবন্দর উপজেলার ৫নং আব্দুলপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি। তার বিরুদ্ধে মুজিববর্ষের ৫টি বাড়ী নিজের ও সন্তানদের নামে বরাদ্দ নেয়া, নিজ দখলে সরকারী ৭ আশ্রয়ন প্রকল্পের বাড়ী নেয়া, ৫০টি পরিবারের কাছে লাখ লাখ টাকা গ্রহন, আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরে মুরগীর ফার্ম নির্মাণ, গুচ্ছগ্রামের গাছ কেটে বিক্রি করা ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে গুচ্ছগ্রামবাসীকে বঞ্চিত করার অভিযোগ তুলেছেন তারা।

ভুক্তভোগীদের স্বাক্ষরিত লিখিত এসব অভিযোগ কপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা বরাবর দায়ের করেন। 

এর আগে মানববন্ধন চলাকালীন সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আন্ধারমুহা গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা আকবর আলী, আইয়ুব আলী ও মোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ। 

অভিযোগ কপিতে উল্লেখ করা হয়, সরকারি আশ্রয় প্রকল্পের ঘর পেয়ে ২০০০ সাল থেকে আন্ধারমুহা গুচ্ছগ্রামের শান্তিপুর্ণভাবে বসবাস করে আসছি। কিন্তু আন্ধারমুহা গুচ্ছগ্রামের সভাপতির ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আইয়ুব আলী বিভিন্ন সময়ে ঘর নির্মাণ করে দেয়ার কথা বলে গুচ্ছগ্রামের অসহায় ৫০টির অধিক পরিবারের কাছে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। তিনি একই আশ্রয়ন প্রকল্পের ৭টি বাড়ি দখল করে রেখেছেন। তার কথামত টাকা না দিলে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়া হয়। তিনি গুচ্ছগ্রামের বেশিরভাগ গাছ কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন। গুচ্ছগ্রামের সরকারি দুটি ঘর দখল করে মুরগির ফার্ম তৈরী করেছেন। ফলে আশপাশের থাকা গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দাদের জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেয়া সরকারের উপহারের ৫টি বাড়ি নিজের ও তার সন্তানদের নামে বরাদ্দ নিয়ে বসবাস করছেন। 

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়- স্থানীয় কৃষক আনিছুর রহমানকে ঘর রেজিষ্ট্রি করে দেয়ার জন্য ৬ হাজার টাকা, ভ্যান চালক জবেদ আলীকে ঘর দেয়ার কথা বলে ৫ হাজার টাকা, প্রতিবন্ধী চকো বেগমকে নতুন করে দেয়ার কথা বলে সাড়ে ১৬ হাজার টাকা, ভ্যান চালক রবিউলকে ঘর দেয়ার কথা বলে ৩ হাজার টাকা, রবিউলের বোন সালমার কাছে ৭ হাজার টাকা, এনামুলের কাছে ২ হাজার টাকা, মনসুরা বেগমের কাছে সাড়ে ৪ হাজার টাকাসহ গুচ্ছগ্রামের প্রায় ৫০টি পরিবারের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আইয়ুব আলী। তার এসব অপকর্মের বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে বিভিন্ন ধরনের হুমকির শিকার হতে হয়। 

অভিযোগের বিষয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গুচ্ছগ্রামের সভাপতি আইয়ুব আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি। তবে নিজের বিরুদ্ধে সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। 

এ ব্যাপারে চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা জানান, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও গুচ্ছগ্রামের সভাপতি আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ আমার অফিসে জমা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।