- সারাদেশ
- পরীক্ষার ফল জানা হলো না মীরের
পরীক্ষার ফল জানা হলো না মীরের
প্রেমিকার নামে মামলা, আদালতে স্বীকারোক্তি

মীর মাঈনুল হক
পরীক্ষার ফল জানা হলো না মীর মাঈনুল হকের। তিনি নরসিংদীর পলাশের মুসা বিন হাকিম ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। গতকাল যে ফল প্রকাশিত হয়, তাতে জিপিএ ৩.৭০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। এ নিয়ে তার বন্ধুরা আক্ষেপ করে বলেছেন, সে যদি বেঁচে থাকত, দিনটি অন্য রকম হতো। ফল জানার পর মাঈনুলের স্বজনেরও কষ্ট যেন আরও তীব্র হয়েছে।
তিন দিন আগে চেতনানাশক পুশ করে অচেতন করে প্রেমিক মাঈনুলকে গলা কেটে হত্যা করেন তার কথিত প্রেমিকা ইসরাত জাহান মীম। একই কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪.০৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন এই তরুণীও। গতকাল আদালতে থাকাকালে নিজের ফল জানতে পারেন। তবে এ নিয়ে তার তেমন কোনো অভিব্যক্তি দেখা যায়নি।
মাঈনুলকে হত্যার ঘটনায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মীম। ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মাঈনুলের ভাই সাইদুর রহমান শনিবার রাতে পলাশ থানায় হত্যা মামলা করেন।
মাঈনুলকে এভাবে হত্যার ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না মীমের বড় বোন সুবর্ণা ইয়াসমিনও। তিনি বলেছেন, এই হত্যার বিচার চাই, যেন আর কারও মা-বাবার বুক এভাবে খালি না হয়।
পলাশ থানার ওসি মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, শনিবার বিকেলে পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার ঘোড়াশাল বাজারে টুথ অফিস নামে একটি ডেন্টাল চেম্বার থেকে মাঈনুলের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি ঘোড়াশাল দক্ষিণ চরপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল ফেলু মীরের ছেলে। আর ঘোড়াশালে টুথ অফিসে অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করতেন মীম।
পুলিশ জানায়, মাঈনুলের সঙ্গে মীমের প্রেম ছিল। গত ৬ ফেব্রুয়ারি মাঈনুল গোপনে অন্য মেয়েকে বিয়ে করায় তা মেনে নিতে পারেননি তিনি। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে দেখা করার কথা বলে মোবাইল ফোনে মাঈনুলকে বাড়ি থেকে ডেকে নেন মীম। ডেন্টাল অফিসে নিয়ে গিয়ে আগে থেকে কিনে রাখা চেতনানাশক পুশ করেন। এতে মাঈনুল অচেতন হয়ে পড়লে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যান মীম।
পুলিশ জানিয়েছে, স্বীকারোক্তিতে মীম বলেছেন- মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে চাকরি করায় চেতনানাশক দ্রুত পুশ করার ব্যাপারে তার অভিজ্ঞতা ছিল। ২০-৩০ মিনিটের মধ্যে মাঈনুলের প্রাণ কেড়ে নেন তিনি। হত্যায় ব্যবহূত ছুরি, মোবাইল ও সিরিঞ্জ ঘোড়াশাল এলাকার নিকটবর্তী শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেন।
মন্তব্য করুন