শিক্ষা অফিসের কর্মচারীর বাড়িতে মিলল পিএসসির সনদপত্র

কক্সবাজারের পেকুয়ায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে কর্মরত মাষ্টার রোলের কর্মচারী মঈন উদ্দিন ওরফে মনিরের (২৮) বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণে পিএসসি’র (প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা) ব্লাংক সনদপত্র জব্দ করা হয়েছে। এসময় ওই কর্মচারীর বাড়ি থেকে সরকারি অফিসের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও উদ্ধার করা হয়।

রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোঁয়াখালী উত্তর পাড়া এলাকায়  মঈন উদ্দিনের বাড়ির আলমিরা থেকে এসব সরকারি কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, ১০/১২ বৎসর ধরে বৎসর ধরে পেকুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে মাষ্টার রোলে অফিস সহায়ক পদে কর্মরত রয়েছেন মঈন উদ্দিন ওরফে মনির । মনিরের সাথে তার পরিবারের সদস্যদের বনিবনা না হওয়ায় রোববার বিকালে তিনি পুলিশের মাধ্যমে তার কক্ষের মালামাল থানায় নিয়ে যান। কিন্তু কক্ষের সব মালামাল থানায় নিয়ে গেলেও একটি স্টীলের আলমিরা থানায় নেয়নি মনির। পরে মনিরের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ওই আলমিরা নিয়ে সন্দেহ হলে তারা খুলে দেখেন। এসময় মনিরের কক্ষে থাকা স্টীলের আলমিরায় পেকুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র দেখতে পেয়ে মনিরের ছোটভাই স্থানীয় কয়েকজন সংবাদকর্মীকে বিষয়টি জানান। পরে রাতে সংবাদকর্মীরা মনিরের বাড়িতে সংবাদ সংগ্রহের জন্য উপস্থিত হন।

 সংবাদকর্মীরা ফোনে কক্সবাজার জেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি জানান। পরে জেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে পেকুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সালামত উল্লাহ খাঁন দ্রুত তার পক্ষে পেকুয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাষ্টার হানিফ চৌধুরী ও সরকারী স্কুলের শিক্ষক মো. শাহাব উদ্দিনকে মনিরের বাড়িতে পাঠান।

পেকুয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসারের পাঠানো প্রতিনিধি দলের প্রধান মাষ্টার হানিফ চৌধুরী স্থানীয় এলাকাবাসী ও সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে মনিরের কক্ষের আলমিরা থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর প্রায় ২২৩ কপি ব্লাঙ্ক সনদপত্র ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র উদ্ধার করেন। পরে তারা উদ্ধার করা এসব কাগজপত্রের জব্দ তালিকা স্থানীয় স্বাক্ষীদের উপস্থিতিতে প্রস্তুত করে শিক্ষা অফিসে নিয়ে যান ।

অপেক্ষমাণ সংবাদকর্মীদের কাছে পরে ব্রিফিংয়ে মাষ্টার হানিফ চৌধুরী বলেন, সরকারি অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এভাবে নিজের হেফাজতে রাখা গুরুতর অপরাধ। এ ব্যাপারে দ্রুত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।  

এ প্রসঙ্গে পেকুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সালামত উল্লাহ খাঁন জানান, খবর পাওয়ার মাত্রই শিক্ষা অফিস থেকে দুই জন প্রতিনিধি পাঠানো হয়েছে এবং মনিরের বাড়িতে পিএসসি’র সনদসহ কিছু কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।