সিলেটে চাঞ্চল্যকর বিজ্ঞান লেখক, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলায় আসামি পক্ষের সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার সিলেট বিভাগীয় সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লবের আদালতে তিন জনের সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

তারা হলেন- শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, ইব্রাহীম মিয়া ও দেলোয়ার হোসেন। সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক আগামী ১ মার্চ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করেন। এই মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মনির উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

আদালত সূত্র জানিয়েছে, গত ২০ জানুয়ারি সাক্ষ্য ও জেরার মাধ্যমে বাদীপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। এই মামলায় ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এরপর ২৬ জানুয়ারি আসামি পরীক্ষা করা হয়। গত ৮ ফেব্রুয়ারি আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের কথা থাকলেও তারা সাক্ষী উপস্থাপনের জন্য সময় প্রার্থনা করেন। মঙ্গলবার তিন সাক্ষী উপস্থিত হলে আসামিপক্ষে তারা সাফাই সাক্ষ্য প্রদান করেন। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন অ্যাডভোকেট আব্দুল আহাদ ও অ্যাডভোকেট ইমরান আহমদ। অন্যদিকে বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম ও মোহাম্মদ মনির উদ্দিন।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১২ মে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে নগরীর সুবিদবাজারের নুরানি আবাসিক এলাকার বাসা থেকে কয়েকশ’ গজ দূরে অনন্ত বিজয়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় দায় স্বীকার করেছিল নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। পরে নিহতের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত চার জনকে আসামি করে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন। 

২০১৭ সালের ৯ মে সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন। এতে আসামিরা হলেন- শফিউর রহমান ফারাবী, মান্নান ইয়াহইয়া ওরফে মান্নান রাহী, আবুল খায়ের রশীদ আহমেদ, আবুল হোসেন ওরফে আবুল হুসাইন, হারুনুর রশীদ ও ফয়সল আহমদ। 

আসামিদের মধ্যে ফারাবী ও খায়ের বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। অপর আসামি মান্নান রাহী কারান্তরীণ অবস্থায় মারা গেছেন। তিনি গ্রেপ্তারের পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। অপর তিন আসামি প্রথম থেকেই পলাতক রয়েছে। ২০১৭ সালের ২৩ মে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হয়েছিল। ২০২০ সালে মামলাটি বিচারের জন্য সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়।