ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ট্রাকচাপায় মাদ্রাসাছাত্র রাসেল নিহত হওয়ার ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও থানায় মামলা না নেওয়ার প্রতিবাদে নিহতের মরদেহ নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বাবা আওয়াল মিয়া। 

মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার হরিপুর বাজারে এ বিক্ষোভে গ্রামের শতাধিক মানুষ তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে অংশ নেন। 

এ সময় ক্ষুব্ধ আওয়াল মিয়া বলেন, ‘পুলিশ মামলা না নিলে ছেলের লাশ দাফন করব না।’

উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের টেকপাড়ায় বাসিন্দা আওয়াল মিয়া সমকালের কাছে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সোমবার সারাদিন পুলিশের কাছে ঘুরেছি ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে মামলা করতে। পুলিশ বলেছে, এই মামলা নেওয়া হবে না। আমার কী অপরাধ! আমার মামলা কেন নেবে না? আমি গরিব বইল্লা? গরিব হইয়া জন্ম নিয়া কী আমার ভুল হয়েছে?’

পরিবারের অভিযোগ, দুই বছর ধরে ইটভাটার মাটি আনা-নেওয়া করার ফলে গ্রামীণ সড়ক নষ্ট করে আসছিলেন রয়েল ইটভাটার অংশীদার ও হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাপ্তান মিয়া। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় আওয়াল মিয়াকে প্রকাশ্যে হুমকি দেন কাপ্তান। পরের দিন কাপ্তান তার কর্মীদের নির্দেশ দেন ট্রাকের সামনে যা পাবে, তা যেন মাটির সঙ্গে পিষে দেয়। এর পর সোমবার দুপুরে আওয়াল মিয়ার ছেলে রাসেল ট্রাকের সামনে দাঁড়িয়ে ট্রাকটিকে ধীরে চালাতে বলায় ট্রাকটি তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রাসেলের। পরে পুলিশ ময়নাতদন্ত করে লাশ হস্তান্তর করে। এ সময় রাসেলের বাবা বারবার কাপ্তানের বিরুদ্ধে মামলা নিতে অনুরোধ করলেও পুলিশ তা নেয়নি।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এলাকার বাসিন্দা মিজান জাবেদ বলেন, দুই দিন ধরে পুলিশের কাছে ঘুরলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। কাপ্তানের টাকার কাছে আইন বিক্রি হয়ে গেছে। আমরা এর বিচার চাই। যে পর্যন্ত পুলিশ মামলা না নেবে সে পর্যন্ত আমরা লাশ দাফন করব না। প্রয়োজনে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব।

তবে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, নিহতের পরিবার থানায় মামলা দেয়নি। মামলা না দিলে কীভাবে মামলা নেব।

এদিকে অভিযুক্ত কাপ্তান এ ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন।