সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, সমাজসেবী, ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। তিনি বুধবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তিনি স্ত্রী, ২ পুত্র-কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। বৃহস্পতিবার ঢাকার ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদে জানাজা শেষে বনানী গোরস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন হবে বলে নিশ্চিত করেছেন পুত্র সৈয়দ তানভীর হোসেন। তিনি কিছুদিন থেকে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।

সৈয়দ মকবুল হোসেন ১৯৪৬ সালে সিলেটের গোলাপগঞ্জের পশ্চিম আমুড়া ইউনিয়নের সুন্দিশাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে বিএ এবং এমএ পাস করেন। পরবর্তীতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। মকবুল হোসেন সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি উপসচিব পদ থেকে পদত্যাগ করে ব্যবসা শুরু করেন। তার জন্মস্থান সুন্দিসাইল গ্রামে প্রতিষ্ঠাতা করেন ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় ও ডিগ্রি কলেজ।

এছাড়া বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। সৈয়দ মকবুল হোসেন ১৯৮৬ সালের তৃতীয় ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিলেট-৬ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে তিনি জড়িত থাকলেও ১৯৯১ সালের পর যোগ দেন বিএনপিতে।

৯৯১ সালের পঞ্চম ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে একই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছিলেন। সম্প্রতি রাজনীতি থেকে তিনি অবসরে ছিলেন।

এদিকে প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে গোলাপগঞ্জ বিয়ানীবাজারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সিলেট-৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সরওয়ার হোসেন, গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল।

এ ছাড়াও গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাজিরা বেগম শীলা, ভাইস চেয়ারম্যান মনসুর আহমদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফুর রহমান, সম্পাদক রফিক আহমদ, পৌর আওয়ামী লীগের সম্পাদক রুহেল আহমদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজ নজমুল ইসলাম, আমুড়া ইউপির চেয়ারম্যান হাসিন আহমদ মিন্টু, বাঘা ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ, লক্ষিপাশা ইউপি চেয়ারম্যান মাহতাব উদ্দিন জেবুল, গোলাপগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি এনামুল হক এনাম ও সম্পাদক ইউনুস আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।