- সারাদেশ
- ভুয়া হাজিরা খাতা, কর্মকর্তা সাজিয়ে চাকরির নামে প্রতারণা করতেন তারা
ভুয়া হাজিরা খাতা, কর্মকর্তা সাজিয়ে চাকরির নামে প্রতারণা করতেন তারা

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ওয়ার্ড বয় পদে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তার সঙ্গে বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে বেড়িয়ে দায়িত্ব বুঝে নেন যশোরের সবুজ হোসেন নামের এক যুবক। পরে হাসপতালে নিয়োগপত্র নিতে গিয়ে বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। হাজিরা খাতা এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা সবই ছিল সাজানো। প্রতারকরা এভাবে ফাঁদে ফেলে কৌশলে চাকরি প্রার্থীদেরস কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। ভুক্তভোগী সবুজ বিষয়টি বগুড়ার পুলিশ সুপারকে জানালে গোয়েন্দা পুলিশের দল প্রতারক চক্রের ৪ সদস্যকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করে।
বৃহস্পতিবার বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তার প্রতারক চক্র কীভাবে প্রতারণা করেছেন তার বর্ণনা দেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-গাবতলী উপজেলার চক কাতুলী গ্রামের আব্দুল খালেক বাবলুর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক ওরফে আফজাল (৩০), একই উপজেলা সদরের কলেজপাড়ার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে নুরুজ্জামান সজল (৪২), ঠাকুরগাঁও জেলা সদরের মলানকুড়ি গ্রামের রমজান আলীর ছেলে সাদেতুল ইসলাম (৩৮) ও বগুড়া সদরের কদিমপাড়া গ্রামের মৃত কছিম উদ্দিনের ছেলে লুৎফর রহমান ওরফে মালেক (৫৮)।
এসময় তাদের কাছ থেকে ভূমি অফিসের ১টি ভুয়া নিয়োগপত্র, সোনালী ব্যাংকের ১টি সিল ও গাবতলী উপজেলা ভূমি অফিসের ১টি হাজিরা খাতা জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, গ্রেপ্তারকৃত রাজ্জাক বিআইডব্লিউটিএর মার্ক ম্যান পদে ২০২০ সাল পর্যন্ত চাকরি করেছেন। অবৈধ কাজ করার অপরাধে তার চাকরি গেলে তিনি প্রতারক চক্রে জড়িয়ে পড়েন। তারা দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেন। তাদের খপ্পড়ে পড়েন যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার তৈলকুপ গ্রামের অমেদ আলীর ছেলে সবুজ হোসেন।
গত ১২ ফেব্রয়ারি সবুজকে শহীদ জিয়াউর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যায় প্রতারক চক্র। সেখানে রাজ্জাক ওরফে আফজাল নিজেকে হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও নুরুজ্জামান সজল নিজেকে অতিরিক্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা পরিচয় দেন। এরপর তারা সবুজের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে বলে তাকে ওয়ার্ড বয় এর চাকরি দেওয়া হবে। এজন্য ৭ লাখ টাকা দিতে হবে। সবুজ টাকা দিতে রাজি হলে পরদিন থেকেই চাকরিতে যোগদান করবেন।
পরদিন ১৩ ফেব্রয়ারি সবুজ তাদেরকে ৭ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। ওই দিনই সবুজ হাসপাতালে কাজে যোগ দিতে গেলে অপর দুই প্রতারক সাদেকুল ও লুৎফর একটি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর নেন এবং বলেন অপর দুইজন তাকে কয়েকদিন কাজ শিখাবেন। সেই অনুযায়ী রাজ্জাক ও নুরুজ্জামান সবুজকে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখান এবং তার কি কাজ সেগুলো বুঝিয়ে দেন।
এরপর নিয়োগপত্র চাইলে বলে ৮ মার্চ হাসপাতালে এসে নিয়োগপত্র ও আইডি কার্ড নিয়ে যাবে। সেই অনুয়ায়ী ৮ মার্চ সবুজ বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে গিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তার রুমে গিয়ে জানতে পারেন আব্দুর রাজ্জাক ওরফে আফজাল নামে কোন প্রশাসনিক কর্মকর্তা নেই। এছাড়াও সবুজ হোসেন নামে কারো ওয়ার্ড বয় পদে চাকরি হয়নি। এসময় সবুজ বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
মন্তব্য করুন