জামালপুরের আশামনির আত্মহত্যার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার সীমা আক্তার নামে দশম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করছে তার পরিবার। 

গত রোববার কিশোরীর ‘আত্মহত্যা’র ঘটনায় পুলিশ হৃদয় রায় নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে, যিনি ফেসবুকে ‘সুমন সেন’ নামে এক আইডি খুলে ‘প্রেমের সম্পর্ক’ গড়ে তুলেছিলেন সীমার সঙ্গে।

সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম সমকালকে এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘সুমন সেন’ নামে ভুয়া আইডি ব্যবহার করে হৃদয় রায় মেয়েদের ব্ল্যাকমেইল করতেন। বিভিন্ন সময় মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে প্রতারণা করতেন। তাকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হৃদয় রায়ের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় সীমার। তাদের প্রেমের সম্পর্ক গাঢ় হলে মেসেঞ্জারে অশ্লীল ছবি পাঠাতে থাকেন হৃদয়। এসব ছবি দেখে বিরক্ত হয়ে উঠেন সীমা। একপর্যায়ে বিচ্ছেদ ঘটানোর কথা জানালে সীমার ছবি ফটোশপে এডিট করে ফেসবুকে প্রকাশ করেন হৃদয়। এতে ক্ষুব্ধ, অপমানিত হয়ে ‘আত্মহত্যা করেছেন’ সীমা। 

সীমার মা ফরিদা বেগম জানান, গত রোববার সকালে মেয়েকে ঘুম থেকে উঠে পড়তে বলি। এরপর আমি পোশাক কারখানায় চলে যাই। রাতে ছুটি হওয়ার পর বাসায় চলে আসি। দেখি ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। অনেক ডাকাডাকির পর ঘরের দরজা খুলছেন না। পরে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় ঘরের দরজা ভেঙ্গে দেখি ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়লা পেঁচানো অবস্থায় ঝুলছে মেয়ের লাশ।

চিরকুটে সীমা লিখেছেন, ‘মা আমি আমার মান সম্মান নিয়ে ওপারে চলে গেলাম। তুমি ভালো থেকো মা। তোমাকে অনেক ভলোবাসি। মা ওরা আমাকে বাঁচতে দিলো না। ওরা আমার ছবি অশ্লীল বানিয়ে মোবাইলে ছড়িয়ে দিয়েছে। মা তুমি অনেক ভালো। আমাকে ক্ষমা করো। ওদের তুমি ছেড়ে দিও না।’

সীমা সাটুরিয়ার জান্না উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।

এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই সীমার নানা আলেক জান বাদী হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন। ওই মামলায় পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে হৃদয় রায়কে বরিশাল থেকে গ্রেপ্তার করেন।