সরকার নির্ধারিত দরে পাইকারি বাজারে সয়াবিন ও পামতেল বেচাকেনা করতে খাতুনগঞ্জের বাণিজ্য ও শিল্প সমিতির নেতাসহ ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম।চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম খাতুনগঞ্জ বাণিজ্য ও শিল্প সমিতিরও সভাপতির দায়িত্বে আছেন।

বৃহস্পতিবার অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী নিয়ে খাতুনগঞ্জে বৈঠক করেছেন তিনি। খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে আয়োজিত এই মতবিনিময় সভায় খাতুনগঞ্জ বাণিজ্য ও শিল্প সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবুল বশর চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগীর আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর পারভেজসহ ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা মিলগেটে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সয়াবিন তেল পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করেন। 

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে মাহবুবুল আলম বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা যাতে ঠিক থাকে সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। আপনারা সরকার নির্ধারিত দরেই কারখানা থেকে ভোজ্যতেল কিনুন এবং একইভাবে সরকার নির্ধারিত দরেই তা বিক্রি করুন। কেউ সরকারের নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করবেন না। সরকার সর্বশেষ গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করে দেয়। সে অনুযায়ী, মিলগেটে সয়াবিনের দর ১৪০ টাকা এবং খুচরায় খোলা সয়াবিনের দর ১৪৩ টাকা। পাম তেলের মিলগেটে দর লিটার প্রতি ১৩০ টাকা এবং খুচরায় তা ১৩৩ টাকা।

সভায় ব্যবসায়ীরা বলেন, দাম বাড়লেই পাইকারি বাজারে অভিযান চালানো হয়। গত বুধবারও এক ব্যবসায়ীকে সরকার নির্ধারিত দরের বাইরে ভোজ্যতেল বিক্রি করায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এভাবে হুটহাট করে মোটা অঙ্কের জরিমানা করা হলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

তারা আরও জানান, সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে পরিশোধন কারখানাগুলো বেশি দরে পণ্য বিক্রি করছে। এখন থেকে বর্ধিত দামে তারা আর পণ্য কিনবেন না।একইভাবে বিক্রিও করবেন না।

সভায় সহসভাপতি আবুল বশর চৌধুরী বলেন, সরকার নির্ধারিত দাম মানতে আমরা সবাই বাধ্য। তবে আমদানি ও পাইকারি পর্যায়ে কোন পণ্য কত দিন রাখা যাবে, তা সুনির্দিষ্টভাবে তুলে ধরে নীতিমালা প্রণয়ন করা হলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে। ভোগ্যপণ্যের চাহিদা, আন্তর্জাতিক বাজার ও আমদানি তথ্যও হালনাগাদ থাকে না কারও কাছে। এটির জন্যও কাজ করতে হবে দায়িত্বশীলদের। তাহলে বাজার নিয়ে আর তৈরি হবে না বিভ্রান্তির। 

আরএম এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার শাহেদ উল আলম বলেন, সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে পাইকারি বাজারে পামতেলের দর কম। আবার সয়াবিনের দরও সরকার নির্ধারিত দরের মধ্যেই। মিলগেট ও খুচরা-এই দুই দরের মধ্যেই পাইকারি বাজারে ভোজ্যতেল বেচাকেনা করার সুযোগ আছে।  

বৃহস্পতিবার বৈঠক হলেও খাতুনগঞ্জে আগের দিনও সয়াবিন তেল বর্ধিত দরে বিক্রি হওয়ার প্রমাণ পেয়েছে ভোক্তা অধিকারের একটি টিম। অভিযানে খাতুনগঞ্জের মেসার্স হরি মোহন বিশ্বাসকে বাড়তি মূল্যে তেল বিক্রির দায়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সতর্ক করা হয় আরও কয়েকটি দোকানিকেও। অভিযান চালানোর পরের দিনই গতকাল হলো অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ীদের নিয়ে এমন বৈঠক।