- সারাদেশ
- সেই ভূমি কর্মকর্তা বরখাস্ত
সেই ভূমি কর্মকর্তা বরখাস্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে আলোচিত সেই ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর মিয়া চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ভূমি সংক্রান্ত সেবাপ্রত্যাশীদের সঙ্গে অসদাচরণ ও ঘুষ লেনদেনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশসাকের স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদন থেকে এর সত্যতা পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নবাসীল পক্ষে শামীম মিয়া নামে এক যুবক ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা আলমগীর মিয়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে সহকারী কমিশনারেরর (ভূমি) কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, সেবাপ্রত্যাশীদের নাম প্রস্তাব, সার্ভে রিপোর্ট, নামজারি, ডিসিআর সংগ্রহ, মিস কেস ও খাজনা দাখিল থেকে শুরু করে সবকিছুতেই টাকা দিতে হয় আলমগীরকে। অভিযোগের পরের দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘুষ গ্রহণ ও ঘুষ দরকষাকষির একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।
ভিডিওর শুরুতে একজন সেবাপ্রত্যাশী তহশিলদারকে বলেন, তারা জমির কাগজ নিয়ে বিভিন্ন অফিসে দৌড়াদৌড়ি করতে পারবেন না। আপনিই কাজগুলো করে দেন। তখন তহশিলদার বলেন, যেহেতু দৌড়াদৌড়ি করতে পারবেন না, তাই যারা এর আগে খারিজ করেছে তাদের জিজ্ঞেস করেন প্রতি খারিজে কত টাকা দিতে হয়।
আরেকজন সেবাপ্রত্যাশীর প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অফিসে একটি সিস্টেম আছে, সে অনুযায়ী কাউকে একশ, কাউকে পঞ্চাশ আবার কাউকে দুইশ, এমন করে প্রায় ছয়-সাতজনকে টাকা দিতে হয়।
লিখিত অভিযোগ ও ভিডিও ভাইরালের পর ২ মার্চ সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় থেকে ওই ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। পরে ৩ মার্চ কারণ দর্শানোর লিখিত জবাব দেয় অভিযুক্ত আলমগীর। লিখিত জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়।
পরে গত ১৩ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক শাহগীর আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ভলাকুট ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা আলমগীর মিয়া চৌধুরীকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সরকারি কর্মচারী বিধি অনুয়ায়ী ১৩ মার্চ থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হল। বিধি মোতাবেক বরখাস্তকালীন খোরপোষ ভাতা পাবেন।
সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে অভিযুক্ত ওই ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর মিয়া চৌধুরী বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিডিওটি ও সুপার এডিডেট, যা বাস্তবতার পরিপন্থি। প্রশাসনকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য একটি সিন্ডিকেট এ অপকর্ম করেছে। আমি ভূমির নামজারি ও জমাখারিজ করতে কিংবা কোনো বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জড়িয়ে কোনো বক্তব্য প্রদান করিনি।
মন্তব্য করুন