কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে পালিয়ে সাগর পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টাকালে স্বর্ণদ্বীপে উদ্ধার ১৪৯ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে নৌবাহিনীর জাহাজে করে ভাসানচরে পৌঁছেন তারা। এর আগে, মঙ্গলবার সাগর পথে মালয়েশিয়া পৌঁছানোর কথা বলে একটি মানব পাচারকারী চক্র ২৩ শিশু, ৭৮ নারীসহ ১৪৯ জন রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারের মহেশখালী স্বর্ণদ্বীপে নামিয়ে দিয়ে চলে যান মাঝি ও দালালরা। বিষয়টি জানার পর পুলিশ তাদের সেখান থেকে উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে ভাসানচরে অবস্থানরত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের প্রতিনিধি (সিআইসি) খালিদ হোসেন বলেন, ‘মহেশখালী থেকে উদ্ধার ১৪৯ রোহিঙ্গা ভাসানচরে পৌঁছেছে। এখানকার প্রক্রিয়া শেষে তাদের জন্য একটি ক্লাস্টারে রাখা হচ্ছে।’

জেলা পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার ১৪৯ জন রোহিঙ্গাকে স্বর্ণদ্বীপ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর ভাসানচর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে বাসে করে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়। পরে সেখান থেকে নৌবাহিনীর জাহাজে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়।

কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, ‘মহেশখালী স্বর্ণদ্বীপে উদ্ধার রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে হস্তান্তর করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে মানব পাচারকারী চক্র প্রলোভন দিয়ে শিবির থেকে তাদের বের করে সাগর পথে মালয়েশিয়া যাত্রার কথা বলে মহেশখালীতে নামিয়ে দেয়। আমরা শিবিরে মানব পাচার ঠেকাতে তৎপরতা বৃদ্ধি করেছি।’

উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরের নেতা জিয়াবুল হক জানান, ‘আবারও শিবিরে হঠাৎ করে মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। চক্রটি প্রলোভন দেখিয়ে শিবির থেকে রোহিঙ্গাদের বের করছে। ফলে শিবিরের বাহিরে অনেক সময় বিভিন্ন জায়গায় রোহিঙ্গা ধরা পড়ছে। এই চক্রটি খোঁজে বের করে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, অন্যতায় সাগর পথে মালয়েশিয়া যাত্রার চেষ্টা থামবে না।’

এদিকে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে কয়েক দফায় প্রায় ২৩ হাজার রোহিঙ্গাকে সরকার ভাসানচরে পাঠায়। এ ছাড়া গত বছর মে মাসে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করা ৩০৬ রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে সেখানে নিয়ে রাখা হয়। এর আগে ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নিপীড়নের শিকার হয়ে রাখাইন প্রদেশ থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়। সরকারি হিসাবে বর্তমানে সেখানে কমপক্ষে ১২ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন।