খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ইকবাল হোসেনকে বেধড়ক মারপিট করেছেন চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। এ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। সোমবার রাতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কয়রা থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনার পর কয়রা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত সচিব ও হিসাবরক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন।

ইউপি সচিব ইকবাল হোসেন বলেন, ‘চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ প্রতিদিনই বিকেলে অফিসে আসেন। আর গভীর রাত পর্যন্ত অফিস করেন। এর ফলে সেবাপ্রত্যাশীরা ভোগান্তির সম্মুখীন হন। সোমবারও বিকেলে পরিষদে আসেন চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। কিন্তু বিকেল ৫টা বেজে যাওয়ায় আমি অফিস ত্যাগ করি। চেয়ারম্যান আমাকে অফিসে যেতে বললে আমি ৫টার পর অফিস করতে পারব না বলে জানাই। পরে চেয়ারম্যানের লোকজন আমাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে আটকে রেখে আমাকে চেয়ারম্যান ও আরও ৩ জন মারধর করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা আমাকে মারধর করেন। জীবনে আমি কখনও এতো মার খাইনি। তাদের পা ধরলেও আমাকে ছাড়েনি। এক সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেখানে আসেন। পরে একটি সাদা কাগজে আমার স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

ইউপি সচিব ইকবাল হোসেনের মা রোকেয়া বেগম বলেন, ‘মোটরসাইকেলে দু’জন লোক এসে হুমকি-ধমকি দিয়ে আমার ছেলেকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। আমি ভয় পেয়ে তাদের পিছু পিছু ভ্যানে করে সেখানে যাই। চেয়ারম্যানের লোকজন আমার মোবাইলও কেড়ে নেয়। পরে অন্য একটি ঘরে নিয়ে আমাকে ভয়ভীতি দেখায়। তখন আমি বুঝতে পারি আমার ছেলের ক্ষতি করেছে তারা। এক সময় উপজেলা থেকে বড় অফিসাররা আসলে উনাদের হাতে পায়ে ধরে আমার ছেলেকে ছাড়ায়ে নিয়ে আসি।’

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের একটি বিষয় নিয়ে তার (সচিব) সঙ্গে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছিল। পরে নিজেদের মধ্যে মীমাংসা করে নিয়েছি।

কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, খবর পেয়ে মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে উভয়পক্ষের কাছে ঘটনার বিবরণ শুনেছি। মারধরের বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। পরে তারা নিজেদের মধ্যে আপস করে নিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।