- সারাদেশ
- সবুজ ঐতিহ্য ধ্বংস করে সিআরবিতে হাসপাতালের আইনি ভিত্তি নেই: রিজওয়ানা হাসান
সবুজ ঐতিহ্য ধ্বংস করে সিআরবিতে হাসপাতালের আইনি ভিত্তি নেই: রিজওয়ানা হাসান

চট্টগ্রাম নগরের সিআরবি এলাকায় প্রস্তাবিত হাসপাতালের স্থান পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
চট্টগ্রাম মহানগরে সবুজ ঐতিহ্য ধ্বংস করে রেলওয়ে যে হাসপাতাল নির্মাণ করতে চাইছে, তার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহি সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, ‘ঢাকার পরে চট্টগ্রাম পৃথিবীর সবচাইতে দূষিত নগরী। এই রকম একটা নগরীতে সবুজ ঐতিহ্য ধ্বংস করে হাসপাতাল কোনোভাবেই হতে পারে না। মাস্টার প্লানে সিআরবি হেরিটেজ সাইট হিসেবে চিহ্নিত। হেরিটেজ সাইটে হাসপাতাল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাছাড়া উন্মুক্ত স্থান, মাঠ এমন জায়গার শ্রেণী পরিবর্তন করার বিষয়ে ২০০০ সালের ৩৬ নম্বর আইনে নিষেধাজ্ঞা দেয়া আছে। এটা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। এইখানে হাসপাতাল করার কোন ধরনের আইনগত ভিত্তি নেই।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের সিআরবি এলাকায় প্রস্তাবিত হাসপাতালের স্থান পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এসময় তার সঙ্গে সাংবাদিক, পরিবেশকর্মী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বেলার প্রধান নির্বাহী রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে প্রথমে একটা চিঠি দিয়েছিলাম। এখন আমি নিজের চোখে দেখে গেলাম। এখন আরও জোরালো করে যুক্তিগুলো তুলে ধরে আবার প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাদেরকে নোটিশ দিব। তাদের বলবো তারা যেন এই প্রকল্পের ধারণা থেকে সরে আসে।’
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমরা সমস্ত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে রেখেছি। হাসপাতাল নির্মাণের জন্য সিডিএ, পরিবেশ অধিদপ্তর বা অন্য কোনো সেবা সংস্থা যদি অনুমোদন দেয়, তাহলে এর বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে মহামান্য হাইকোর্টে রিট মামলা করবো। আশা করছি এর আগেই চট্টগ্রামবাসী আন্দোলনের মাধ্যমে এই উদ্যোগকে প্রতিহত করবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে যথাযথ আন্তরিকতার সাথে নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন।’
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘রাজনৈতিক সরকারকে তার ন্যূনতম জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে হলে জনগণের মতের বিপক্ষে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা আশা করব প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব জনমত ও দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে। জনগণের আন্দোলন অনেক বেশি শক্তিশালী। সেটার কারণে বাধ্য হয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এবং যে বেসরকারি সংস্থা এখানে প্রকল্প করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত আছে তারা সরে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে হাসপাতাল লাগবে কি, লাগবে না সেটা ভিন্ন বিষয়। হাসপাতাল লাগলে মাঠ, খোলা উদ্যান, হেরিটেজ ধ্বংস করে হাসপাতাল করতে হবে এটা কোন যুক্তি হতে পারে না। যে সমস্ত মানুষের জন্য এই হাসপাতাল সে ধরনের আরো হাসপাতাল এখানে আছে। এই হাসপাতাল সাধারণ মানুষের কোন কাজে আসবে না। এই হাসপাতাল যেখানে খাস জমি বা পতিত জমি আছে তারা সেখানে করুক কোনো বাধা নেই।’
মন্তব্য করুন