বাল্যবিয়ে দেওয়ার অভিযোগে সেই শিক্ষিকাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। শিক্ষকের স্বীকারোক্তি ও প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয় বাল্যবিয়ের বিষয়টি। অসদাচরণের দায়ে অভিযুক্ত হওয়ায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (চলতি দায়িত্ব) মোস্তাফিজুর রহমান তাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ দেন। মঙ্গলবার দুপুরে এ লিখিত আদেশ জারি করা হয়।

চুয়াডাঙ্গায় নিজ স্কুলের ৫ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে পুত্রবধূ করে ঘরে তুলেছেন ওই শিক্ষিকা। বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এ নিয়ে এলাকায় রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর গ্রামে।

ওই গ্রামের শামসুন নাহার বর্তমানে বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি তার দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে আবদুর রহমানের সঙ্গে নিজ স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী শারমিন আক্তারকে বিয়ে দিয়ে ঘরে তুলেছেন। প্রথম কয়েকদিন বিষয়টি গোপন থাকলেও ছেলে আবদুর রহমান নববধূকে নিয়ে ঘটা করে শ্বশুরবাড়ি পার্শ্ববর্তী ছোটশলুয়া গ্রামে বেড়াতে এলে তা জানাজানি হয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের ছোটশলুয়া গ্রামের দিনমুজুর অশোক আলীর মেয়ে শারমীন আক্তার (১১) বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকা শামসুন নাহার তার ছেলে বেগমপুর-যদুপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র আবদুর রহমানকে ২০ মার্চ শারমিনের সঙ্গে বিয়ে দেন।

হাতে মেহেদির রং নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করছে শারমিন আক্তার। বিয়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে অপকটে স্বীকারে করে বলে, ‘গত এক সপ্তাহ আগে ম্যাডামের ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। বর্তমানে সে (আমার স্বামী) আমাদের বাড়িতে আছে। আমি বাড়িতে এসে স্কুলে ক্লাস করছি।’ 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (চলতি দায়িত্ব) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অসাচরণের দায়ে অভিযুক্ত হওয়ায় ওই শিক্ষিকাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শামিম ভূইয়া বলেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার চাকরিবিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। বিষয়টি আমি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।