এবারও হচ্ছে না চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জব্বারের বলীখেলা ও মেলা। মহামারি করোনার কারণে গত দুবছর ধরে বন্ধ রয়েছে বলীখেলা ও মেলা। তবে এ বর্তমানে করোনার ভয়াবহতা কমে আসলেও যেখানে খেলার আয়োজন করা হয় নগরীর সেই লালদীঘির মাঠ উন্মুক্ত না হওয়ায় বলীখেলা ও মেলা আয়োজন করা যাচ্ছে না। বুধবার দুপুরের দিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০১৯ সালে জব্বারের বলীখেলা ও মেলার ১৯০তম আসর বসেছিল। প্রতি বছর ১২ বৈশাখ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভারে কারণে ২০২০-২১ সালে এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করা যায়নি। আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটি ১১০ বছর ধরে এই বলীখেলা চট্টগ্রামের লালদীঘির মাঠে আয়োজন করে আসছে।

জব্বারের বলীখেলা উপলক্ষে যে মেলা বসে তাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তাদের নানা পসরা নিয়ে আসেন। চট্টগ্রাম ও আশেপাশের জেলার লোকজন এই মেলা থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী সংগ্রহ করেন। কিন্তু এবারও বলীখেলা না হওয়ায় মেলাও হচ্ছে না।

বহু ইতিহাসের সাক্ষী লালদীঘি মাঠেই বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা ঘোষণা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০ সালে লালদীঘি ময়দান ঘিরে ঐতিহাসিক ছয় দফার স্মৃতি সংরক্ষণে 'নগরীর লালদীঘি মাঠ সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধন' শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর। তাই মাঠটি উম্মুক্ত করা হয়নি। মাঠটি আগামী বছর সবার জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়ার কথা রয়েছে। সেটা হলে আগামী বছর থেকে বলীখেলার আয়োজন করা হবে বলে জানান আয়োজকরা।

সংবাদ সম্মেলনে আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটির সভাপতি চসিক কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী জানিয়েছেন, মাটি ও মানুষের খেলা এই জব্বারের বলীখেলা। করোনার কারণে গত দই বছর এই মেলা আয়োজন করা যায়নি। তবে এ বছর আয়োজন করার কথা থাকলেও তা পারা যাচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটির সহ-সভাপতি এবং চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সাবেক কমিশনার এএসএম জাফর, সাধারণ সম্পাদক সওকত আনোয়ার বাদল, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ জামাল হোসেন প্রমুখ।