অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের মামলায় আরও দুইজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ নিয়ে এই মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করেছেন আদালত।

বুধবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদের আদালতে এই দুইজনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। নতুন সাক্ষ্য দেওয়া দুইজন হলেন- কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সদর সার্কেলের সাবেক সাব-রেজিস্ট্রার শাহ আশরাফ উদ্দীন ও জাহাঙ্গীর আলম। আগামী ১৯ এপ্রিল পরবর্তী দিন সাক্ষীর জন্য নির্ধারণ করেছেন আদালত।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক জানান, সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় দুইজন সাব-রেজিস্ট্রার আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন। কক্সবাজারে রেজিস্ট্রি হয়েছে একটা দলিল এবং চট্টগ্রাম সদর সার্কেলে একটা দানপত্র ও বায়নানামা হয়েছে, যার সার্টিফাইড কপি আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই দুইজনসহ এ পর্যন্ত ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেছেন আদালত। এসময় প্রদীপ কুমার দাশ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

প্রদীপের আইনজীবী রতন চক্রবর্তী জানান, প্রদীপের বিরুদ্ধে দুই সাব-রেজিস্ট্রার আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামিপক্ষ থেকে দুইজনকে জেরা করা হয়েছে। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর দুদকের মামলায় আসামি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরম্নর আদেশ দেন আদালত। তার প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদক কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বাদি হয়ে দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-১ এ সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে প্রায় ৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকা ওসি প্রদীপ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেছেন বলে দুদক অভিযোগ করে। এছাড়াও আরও ১৩ লাখ ১৩ হাজার ১৭৫ টাকার সম্পদের তথ্য বিবরণীতে গোপন করার অভিযোগও আনা হয়।

কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এরপর টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ওই বছরের ৬ আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন ওসি প্রদীপ। ওই মামলায় চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি দেওয়া রায়ে প্রদীপকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।