পরিবার অভিযোগ করেছে, রাজশাহী কলেজের হিসাববিজ্ঞানের স্নাতকোত্তরের ছাত্র মিজানুর রহমানকে গত শনিবার র‌্যাব তুলে নিয়ে গেছে। পরিবারের দাবি, র‌্যাব-৫-এর হেফাজতে থাকাবস্থায় মিজানুরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথাও হয়েছিল। পরে র‌্যাব মিজানুরকে ধরার কথা অস্বীকার করে। কিন্তু র‌্যাব বলছে, মিজানুর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সাফফাত নাঈম নাফির রগ কাটায় জড়িত। তাকে খোঁজা হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার রাজশাহীর রানীবাজারে সংবাদ সম্মেলনে নিখোঁজ মা, বাবা ও ছোট ভাই অভিযোগ করেন, শনিবার বিকেল ৬টার দিকে নগরীর বিনোদপুরের মণ্ডলের মোড় এলাকার বালুমাঠে দাঁড়িয়ে ছিলেন মিজানুর। পার্শ্ববর্তী গলি থেকে তাকে তুলে নিয়ে যান তিনজন র‌্যাব সদস্য। একজন র‌্যাবের পোশাকে এবং বাকি দু'জন সাদা পোশাকে ছিলেন। সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে বলে মিজানুরের ছোট ভাই নবাব শরীফের দাবি।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় মেজো ভাই নজরুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোন থেকে মিজানুরকে কথা বলিয়ে দেওয়া হয়। তখন মিজান বলেন, 'আমাকে র‌্যাব-৫-এ আনা হয়েছে। আগামীকাল থানায় পাঠাবে।' পরদিন দুপুর ১২টার দিকে আরেকটি নম্বর থেকে কল করে জানানো হয়, মিজানুর ভালো আছেন। ১১ এপ্রিল নজরুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী র‌্যাব কার্যালয়ে গেলে জানানো হয়, মিজানুর নামে কেউ নেই। কিন্তু ওই দিন বিকেলে মিজানুরের মা র‌্যাব কার্যালয়ে গেলে তাকে জানানো হয়, মিজানুর তাদের হেফাজতে রয়েছে। এর পর থেকে মিজানের খোঁজ নেই। মতিহার থানায় জিডি করতে গেলেও পুলিশ তা নেয়নি।

র‌্যাবের ওই নম্বরে ফোন করলে নায়েক রহিদুল পরিচয়ে একজন সমকালকে বলেন, মিজানুর রহমান নামের কারও পরিবারকে ফোন করা হয়নি।

মিজানুর রহমানের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত অধ্যাপক ড. তাহের হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।

র‌্যাব-৫-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল রিয়াজ শাহরিয়ার সমকালকে বলেছেন, মিজান বিনোদপুরে এক ছাত্রের রগ কাটার সঙ্গে জড়িত। ওই ঘটনায় আটক নবাব শরীফ ও বাপ্পী নামের দু'জন স্বীকারোক্তিতে তাদের নাম বলেছে। তবে র‌্যাব মিজানুরকে আটক করতে পারেনি; আটক করার জন্য খুঁজছে।

মতিহার থানার ওসি আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, গত ৯ মার্চ নাফির রগ কাটার পর থেকে মিজানুর পলাতক। তার পরিবার দু'দিন আগে জিডি করতে এসেছিল। আমরা বলেছি, 'সে তো নাফির রগ কাটার পর থেকে পলাতক। তাকে খুঁজে দেখেন। না পেলে পরে জিডি করতে আসবেন।'