- সারাদেশ
- মুফতি শফিকুলকে কিশোরগঞ্জ কারাগার থেকে কাশিমপুরে স্থানান্তর
মুফতি শফিকুলকে কিশোরগঞ্জ কারাগার থেকে কাশিমপুরে স্থানান্তর

মুফতি শফিকুল ইসলাম
রাজধানীর রমনা বটমূলে ২০০১ সালে ছায়ানটের পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি শফিকুল ইসলামকে (৬১) কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কিশোরগঞ্জ কারাগারে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এবং এখানে তার নামে কোনো মামলা না থাকায় শনিবার গাজীপুরের হাই সিকিউরিটি সমৃদ্ধ কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কিশোরগঞ্জের জেল সুপার মো. বজলুর রশিদ।
কিশোরগঞ্জ জেলা জারাগার সূত্রে জানা যায়, মুফতি শফিকুল জেলার ভৈরব উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের বাঁশগাড়ী গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে। শফিকুলকে র্যাব -২ সদস্যরা গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর ভৈরব থেকে গ্রেপ্তার করেন। এরপর শুক্রবার বিকেলে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে কিশোরগঞ্জের আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। এখানে তাকে পৃথক সেলের ভেতর কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে রাখা হলেও কিশোরগঞ্জে তার নামে কোনো মামলা না থাকা এবং এই কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এরকম একজন উগ্র জঙ্গির জন্য পর্যাপ্ত মনে না করায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সম্মতিতে তাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেল সুপার নিরাপত্তার জন্য পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদের কাছে চিঠি দিলে তিনি পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ চারটি গাড়ির ব্যবস্থা করে দেন। পুলিশ, র্যাব ও ডিএসবির চারটি গাড়িবহর নিয়ে শফিকুলকে বেলা পৌনে ১১টার দিকে কাশিমপুরের উদ্দেশে পাঠানো হয়। কারাগার থেকে শফিকুলকে বুঝে নেন পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রশিদ। দুপুর পৌনে ১টার দিকে শফিকুলকে নিয়ে গাড়িবহর কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছে।
কিশোরগঞ্জ জেল সুপার জানান, তার কাছে শফিকুলের বিরুদ্ধে ৪টি মামলার তথ্য রয়েছে। প্রথমটি হলো হবিগঞ্জের বিশেষ ট্রাইবুনালের। দ্বিতীয়টি সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের। তৃতীয়টি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের এবং চতুর্থ মামলাটি হলো ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের। তবে ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে শেখ হাসিনার সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হওয়া মামলায় ইতোমধ্যে রায় হয়েছে। ওই রায়ে ইতোমধ্যে মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এই মামলায় শফিকুলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল।
২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যেরবাজারে গ্রেনেড হামলায় সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যার ঘটনায়ও মুফতি শফিকুল চার্জশিটভুক্ত আসামি। তিনি ২০০৮ সাল থেকে ছদ্মনাম আব্দুল করিম পরিচয়ে নরসিংদীর এক চরে পাঁচ হাজার টাকা বেতনে একটি মসজিদে ইমামতির চাকরিতে যোগ দেন। পরিচয় গোপন করে তিনি ২১ বছর পলাতক ছিলেন। রমনা বটমূলের ঘটনায় সিআইডি ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর মুফতি হান্নান ও মুফতি শফিকুলসহ ১৪ জনের নামে আদালতে দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছিল। একটি হত্যা ও একটি বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে।
হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন আদালতের রায়ে সংগঠনের শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নান ও মুফতি শফিকুলসহ ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৬ জনের যাবজ্জীবন হয়। অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলাটি বর্তমানে ঢাকার ১নং দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে বিচারাধীন আছে।
মন্তব্য করুন