রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। একজনের হাতে রজনীগন্ধা ও গোলাপ ফুল। আরেকজনের হাতে ট্রাফিক মামলা দেওয়ার যন্ত্র। মোটরসাইকেলের যারা আসা-যাওয়া করছেন, তাদের প্রত্যেককে ধরা হচ্ছে। যেসব চালক হেলমেট পরেছেন, তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন আর যাদের হেলমেট নেই, তাদের দেওয়া হচ্ছে মামলা।

রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার পৌর চৌরাস্তা এলাকায় দিনভর এভাবেই দায়িত্ব পালন করে পুলিশ। পুলিশ বলছে, সচেতনতা বাড়াতে এবং সড়ক দুর্ঘটনায় বড় ধরনের ক্ষতির ঝুঁঁকির হাত থেকে রক্ষা করতেই তাদের এ চেষ্টা।

সারাদিনে তাদের অভিযানে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি পেয়েছেন ফুলেল শুভেচ্ছা। পুলিশের কাছ থেকে এমন শুভেচ্ছা পেয়ে আনন্দে গন্তব্যে গেছেন তারা। অন্যদিকে হেলমেট না পরায় যারা মামলা খেয়ে জরিমানা গুনেছেন, তারা হয়েছেন বেজার। যদিও তারা পণ করেছেন, হেলমেট ছাড়া আর বের হবেন না।

সকাল ১১টার দিকে শাহ আলম নামের এক ব্যক্তির মোটরসাইকেল আটক করা হয়। হেলমেট পরায় তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বোচাগঞ্জ থানার ওসি মাহামুদুল হাসান। পুলিশের দেওয়া ফুল নিয়ে হাসি দিয়ে বলেন, ‘আমি তো সবসময় হেলমেট পরি এবং ভবিষ্যতেও পরব। কারণ এতে করে আমাদেরই বেশি লাভ। দুর্ঘটনার কথা তো বলা যায় না।’

থানা সূত্রে জানা যায়, যারা হেলমেট পরেননি, তাদের জরিমানা করা হয়েছে ৩ হাজার টাকা করে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে হেলমেট পরবেন বলে প্রতিশ্রুতি নেওয়া হয়েছে। কয়েক ঘণ্টার অভিযানে ১০টি মামলা দিয়ে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

ওসি মাহামুদুল হাসান বলেন, ট্রাফিক আইন মেনেই চালকদের সচেতন করা হচ্ছে। পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, ট্রাফিক পুলিশ ও থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান চলছে জেলার প্রতিটি উপজেলায়। হেলমেটের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। দেখা গেছে, সড়ক দুর্ঘটনায় যারা মারা গেছেন, তাদের বেশিরভাগের মাথায় হেলমেট ছিল না।