নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় একটি ইট ভাটায় অভিযান চালানোর সময়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর হামলা চালিয়েছেন বিক্ষুব্দ শ্রমিকরা। এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে গাড়ি ভাঙচুর করে। শ্রমিকদের হামলায় গাড়ির চালক মো. আরমান ও একজন পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়েছেন। ইটপাটকেলের আঘাতে ম্যাজিস্ট্রেট বহনকারী একটি গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার বিকেলে তিনজন পুলিশ নিয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন নাহার ও নুসরাত আরা খানমের সমন্বয়ে একটি মোবাইল কোর্ট জাকির হোসেনের মালিকানাধীন বক্তাবলী ব্রিক ফিল্ড অ্যান্ড মা ট্রেডার্স নামে ইট খোলায় আসে। এ সময় মোবাইল কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেটরা জাকির হোসেনকে ডেকে তার ইটখোলা পরিচালনার বৈধ কাগজপত্র দেখতে চান।

এ সময় তিনি কাগজপত্র দেখাতে সময় চাইলে তার কোনো কথা না শুনে ভেকু দিয়ে ইটভাটা ভাঙচুর শুরু করা হয়। এতে জাকির হোসেন বাধা দিলে তাকে ম্যাজিস্ট্রেটরা ধমক দেন। তখন ইটখোলার শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে মোবাইল কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশের উওর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। তখন ম্যাজিস্ট্রেটদের বহন করা একটি গাড়ির গ্লাস ইটের আঘাতে ভেঙে যায়। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশ সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম বলেন, ইট খোলায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বিষয় আমাদের কাছে কোনো তথ্য বা সহযোগিতা কেউ চায়নি। এ বিষয় কিছু জানি না। তবে পুলিশের একটি সূত্র জানান, নায়েক মোসাদ্দেকের নেতৃত্বে কনস্টেবল জগলু ও জুবায়ের নামে পুলিশ লাইনস থেকে তিনজন পুলিশ ওই মোবাইল কোর্টের সহযোগিতায় ছিলেন।

ইট খোলার মালিক জাকির হোসেন জানান, ইট খোলা পরিচালনার জন্য বৈধ সব কাজগপত্র আমার আছে। এছাড়া সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের অনুমতির জন্য একটি আবেদন করেছি সেটি এখনো পাইনি। এখানে আমারসহ আশপাশের ২৩টি ইটখোলা পরিচালনার জন্য সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন করেছি। আদালত ১৬ মার্চ আমাদের কাগজপত্র তৈরি করার জন্য ৩ মাসের সময় দিয়েছে। এর আগেই বিএসটিআই, পরিবেশ অধিদপ্তরের, কল কারখানার, ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স নিয়েছি। একই সময়ের মধ্যে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেট লাইসেন্সও নিয়েছি।

তিনি আরও জানান, মোবাইল কোর্ট এসে আমার কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখানোর সময় দেইনি। এ ইটখোলা চালাতে গিয়ে অনেক ঋণ হয়েছে আমার। আমার ধারণা কোনো একটি পক্ষ মোবাইল কোর্টকে ভুল তথ্য দিয়ে আমার ইটখোলা ভাঙচুর করিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।

মোবাইল কোর্টে অংশ নেওয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন নাহার বলেন, একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এছাড়া কেউ আহত হয়নি। ঊর্ধ্বতন অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করে পরে বিস্তারিত জানাব।