অনলাইনে কমমূল্যের চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকের কাছে নিম্নমানের পণ্য পাঠিয়ে প্রতারণার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। রোববার হাজারীবাগের শংকর পশ্চিম ধানমন্ডির একটি বাসায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে ডিবি লালবাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. বাপ্পি হাসান, মো. আরিফুল ওরফে হারিসুল, মো. সোহাগ হোসেন, মো. বিপ্লব শেখ ও নুর মোহাম্মদ।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের হেফাজত থেকে বিপুল পরিমাণ ব্যবহার অযোগ্য ও অতি নিম্ন মানের পুরাতন ছেঁড়া শাড়ি, লেহেঙ্গা, থ্রি পিসসহ বিভিন্ন পণ্য-সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা হয় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত আইফোন, ল্যাপটপ ও ২১টি ভিন্ন অনলাইন শপিং পেজ।

সোমবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান উপ-পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-লালবাগ) মো. রাজীব আল মাসুদ।

উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে মানুষ অনেকটাই অনলাইন শপিংয়ে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। ঈদকে সামনে রেখে অনেকেই মার্কেটে গিয়ে ঝামেলা এড়াতে অনলাইনে কেনা-কাটা করছেন। এ সুযোগে কিছু প্রতারক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আকর্ষণীয় ড্রেসের কমমূল্যে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। সাধারণ মানুষ তাদের বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি অর্ডার করে প্রতারিত হচ্ছেন। নিম্নমানের পণ্য পাঠিয়ে প্রতারণার অভিযোগে ডিবি পুলিশ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে”।

গ্রেপ্তারদের প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে ডিবি এই কর্মকর্তা বলেন, ‘অনলাইন প্রতারক চক্রের এ সদস্যরা ফেসবুকে পেজ খুলে ভালো মানের পণ্যের আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। পরবর্তী সময়ে কেউ অর্ডার করলে এসএ পরিবহনের মাধ্যমে অর্ডারকৃত মাল পাঠায়। কিন্তু গ্রাহক যখন পার্সেলটি বাসায় নিয়ে খোলেন তখন তিনি হতভম্ব হয়ে যান। কারণ সেই পার্সেলে থাকে নিম্নমানের ব্যবহারের অযোগ্য ও নষ্ট মালামাল। গ্রাহকরা যখন ওই নাম্বারে ফোন দেন তখন আজ না কাল বলতে থাকে এবং একসময় তাকে ব্লক করে দেন। তারা একটি পেজ কিছুদিন ব্যবহার করার পর গ্রাহকগণ প্রতারিত হওয়ার ফলে বিভিন্ন বাজে কমেন্ট করায় তারা পরবর্তীতে নতুন পেজ খুলে একইভাবে প্রতারণা করেন’।

গ্রাহকরা অল্প কয়েক হাজার টাকার জন্য ঝামেলা এড়াতে আইনের আশ্রয় নেন না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘এভাবে প্রতারণা করে তারা প্রতিদিন এক থেকে দেড় লাখ এবং মাসে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকার প্রতারণা করছেন। গ্রাহক প্রতারিত হওয়ায় আস্থা হারিয়ে দেশের ই-কমার্স সাইট প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে পড়ছে’।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে হাজারীবাগ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।