মাগুরা পিটিআইর সুপারিনটেনডেন্ট শাহিদা খাতুনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার মানববন্ধন করেছেন মাগুরা পিটিআই সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাকরা।
অভিভাবকরা জানান, ঝরে পড়া রোধে এবং শিক্ষার্থীদের স্কুলগামী করতে শিশুদের মায়েদের মোবাইল ফোনে উপবৃত্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। সব শিক্ষার্থীর ভর্তি ফিও মওকুফ করতে বলা হয়। এ বিষয়ে ২০১৫ সালের ৪ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে শিক্ষা অধিদপ্তর। কিন্তু নির্দেশনা উপেক্ষা করে ২০১৯ সাল থেকে সব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বছরের শুরুতে ৩৯০ টাকা আদায় করেছেন শাহিদা খাতুন।
গত ২০ মার্চ তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মাগুরা শহরের হাসপাতাল পাড়ার বাসিন্দা রাশিদুল ইসলাম। এতে উল্লেখ করেন, শাহিদা খাতুন কৌশলে ১৯৯৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ২৭ বছর মাগুরা প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনাস্টটিউটে (পিটিআই) চাকরি করছেন। একই প্রতিষ্ঠানে ইন্সট্রাক্টর, সহকারী সুপার ও সুপার পদে চাকরি করার সময় দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। বর্তমান ডিজির (মহাপরিচালক) সঙ্গে তার সখ্যের কারণে এসব সম্ভব হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চার বছর ধরে তিনি সুপারিনটেনডেন্ট হয়েছেন। ক্যাম্পাসের মধ্যে কোয়ার্টারে থাকার কথা থাকলেও তিনি থাকেন অন্য জায়গায়। বাসাটি ব্যবহারের অযোগ্য দাবি করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে একটি সনদও নিয়েছেন। অথচ কোয়ার্টারে কোনো সমস্যা নেই। করোনাকালে প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ওয়ার্কশিট বিতরণের জন্য ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। ওই ওয়ার্কশিট ছাত্রছাত্রীদের না দিয়ে নিজে সব টাকা আত্মসাৎ করেছেন। শিশু শ্রেণিতে ভর্তির আবেদনপত্র বাবদ ৪০০ জনের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু সে টাকার হিসাব নেই। ১০০ জনের ভর্তি ফি বাবদ ৩৯০ টাকা করে আদায় করা ৩৯ হাজার টাকারও হদিস নেই।
প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত কয়েকজনের ভাষ্য, শাহিদা খাতুনের অনুসারী শিক্ষকরা দিনের পর দিন কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। বরং তাদের দিয়ে উপস্থিতির বিষয়ে সই করিয়ে নেন। ভ্রমণ ছাড়াই ইউডিএকে চার হাজার টাকার ভুয়া ভাড়া দেওয়া হয়। বিভিন্ন তহবিলের বরাদ্দের বিপরীতে খরচ ছাড়াই ভুয়া বিলে শিক্ষকদের চাপ দিয়ে সই করিয়ে টাকা তুলে নিয়েছেন।
শাহিদা খাতুন জানান, একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কোনো ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির সঙ্গে জড়িন নন তিনি।