- সারাদেশ
- ফরিদপুরের ১০ বেডের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি ১৩৫
ফরিদপুরের ১০ বেডের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি ১৩৫

হাসপাতালে বেড না পেয়ে গাছ তলায় চিকিৎসা নিচ্ছেন আলফাডাঙ্গা উপজেলার আব্দুল্লাহ আবু খান/ ছবি- সমকাল
হঠাৎ ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে ফরিদপুরে। গত ২৪ ঘণ্টায় ফরিদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১০৮ জন রোগী। শয্যা সংকুলান না হওয়ায় রোগীদের বারান্দা ও গাছ তলায় থাকতে হচ্ছে।
আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় ফরিদপুর সদর জেনারেল হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ড ছাড়াও আশপাশের সকল ওয়ার্ডে এখন এই রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন রোগী। প্রতিষ্ঠানটির কোথাও সিট না পেয়ে অনেকেই বারান্দা ও গাছতলায় চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।
ফরিদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমান জানান, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি না নেওয়ায় চাপ বেড়েছে সদর জেনারেল হাসপাতালে। এই হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বেড মাত্র ১০টি। বর্তমানে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৩৫। এই বিপুল সংখ্যক রোগীর সেবা দিতে নার্স ও চিকিৎসকদের হিমসিম খেতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, সীমিত সংখ্যক জনবল দিয়ে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। ডায়রিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এছাড়াও রোগীর প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আগারাওলা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত এই হাসপাতালে ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ১০৮ জন। আর গত এক সপ্তাহে এ রোগে ভর্তি রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে ৪৩২ জনের। তবে ভর্তি রোগী বেশি দিন থাকছেন না, ভালো হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
রোগীর স্বজনেরা জানান, একদিকে চিকিৎসাসেবা পেতে কষ্ট হচ্ছে, অন্যদিনে দালালদের উৎপাত বেড়েছে অনেক। ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বের হলেই পেছনে লাগে তারা।
এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার আব্দুল্লাহ আবু খান। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ২টায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এখন দুপুর সাড়ে ১২টা বাজে। কাঁঠাল গাছ তলায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
তিনি জানান, তার মতো আরও অনেকেই এইভাবে চিকিৎসা নিচ্ছে। তাদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতাল থেকে তারা প্রয়োজনীয় ওষুধ পাচ্ছেন না। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।
হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্তব্যরত সিনিয়র নার্স গোলাপি বেগম বলেন, আমরা এখন সাপ্তাহিক ছুটি না নিয়ে দিন-রাত রোগীর সেবা করে যাচ্ছি। রোগী আসছে প্রচুর, জায়গা দিতে পারছি না। নিরুপায় হয়ে অনেকেই ফ্লোর, বারান্দা বা গাছতলায় সেবা নিচ্ছেন।
ফরিদপুর সদর জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. তানজিলুর ইসলাম বলেন, রোগী আসছে অনেক, তবে সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছি। এ রোগীদের দুই থেকে তিন দিন ঠিকমতো যত্নে রাখলে ভালো হয়ে যায়।
মন্তব্য করুন