- সারাদেশ
- নিউমার্কেটে সংঘর্ষে তৃতীয় পক্ষের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল: শিক্ষামন্ত্রী
নিউমার্কেটে সংঘর্ষে তৃতীয় পক্ষের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল: শিক্ষামন্ত্রী

চাঁদপুর সার্কিট হাউসে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ছবি: সমকাল
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘাত ছড়িয়ে দিতে তৃতীয় পক্ষের শুধু ইন্ধনই ছিল না, এখানে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণও ছিল বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এসময় এ ঘটনায় নিহত দুইজনের পরিবারের পাশে সরকার দাঁড়াবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
শুক্রবার বিকেলে চাঁদপুর সার্কিট হাউসে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, নিউমার্কেটে ফাস্টফুডের যে দোকানি, তাদের রাজনৈতিক পরিচয় জানা গেছে। নিজেদের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনা, এরপর শিক্ষার্থীদের এনে তার ব্যাপকতা ছড়িয়ে একটা অরাজকতার পরিবেশ তৈরি করেছেন। সুতরাং কোনো অবস্থায়ই তাদের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ সবার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রয়োজন। সবচেয়ে দুঃখজনক হল, ঘটনাটি শুরু হয়েছে একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এরপর সেটির বিস্তার এবং তার মধ্য দিয়ে দুইজনের প্রাণহানি ঘটা- এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না। সংঘর্ষের ঘটনায় আমাদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা আহত হয়েছেন। তবে এরমধ্যে অনেক কিছুই বেরিয়ে আসছে, তদন্ত হলে আরও হয়ত বের হয়ে আসবে। সাধারণত শিক্ষার্থীদের নানা রকম দোষারোপ করা হয় অনেক সময়ই। কিন্তু এবার ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে।
তিনি বলেন, এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটু দেরিতে এসেছে। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আমাদের সবারই অনেক সচেতন হওয়ার নিশ্চয় প্রয়োজন রয়েছে। পরিবেশ যেন ঠিক থাকে সেদিকে সবার প্রচেষ্টা থাকতে হবে। সব পক্ষ এক সঙ্গে বসে একটা শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছে। এ জন্য তাদের সাধুবাদ জানাই।
মন্ত্রী বলেন, সবাই মনে করছে, এখানে একটা তৃতীয় পক্ষের শুধু ইন্ধনই নয়, একেবারে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। সেই অংশগ্রহণের কারণেই এটি এত বড় সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। মোটামুটি চিহ্নিত একটি পক্ষ সবসময় চেষ্টা করছে, যেকোনোভাবে শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে। এটি তাদের ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের একটা অপচেষ্টা। এখানেও আমাদের কাছে মনে হয়েছে সে রকম একটা হয়ত ছিল।
নিউমার্কেট ও তার আশপাশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে। এখনই তাদের ব্যবসা করার সময়। এছাড়া বিগত দুই বছর করোনার কারণে ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তা বিবেচনায় নিয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মন্ত্রী বলেন, পুরো ঘটনাই অনভিপ্রেত ছিল। সংঘর্ষে যে দুইজন প্রাণ হারিয়েছেন, তারা আসলে তো এই সংঘর্ষের মধ্যে অংশগ্রহণ করেননি। তারা দুইজনই নিজেরা যার যার কাজে যাচ্ছিলেন। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অন্য দেশের চেয়ে আমাদের দেশের উচ্চশিক্ষার মান তেমন খারাপ নয়। বিশ্ব র্যাং কিংয়ে মান ধরে রাখতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এমন পরিস্থিতিতে দেশের বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয় অনেক ভালো করছে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষার মান র্যাং কিং করেন, তারা কোন মানদণ্ডে তা করেন, সংশ্লিষ্টদের কাছে এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী পরে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে কৃষকদের মধ্যে কৃষি উপকরণ সামগ্রী বিতরণ করেন। এসময় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম দেওয়ান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা (ইউএনও) শাহনাজসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন