ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় পুলিশ হেফাজতে নজির আহমেদ (৩৫) নামে এক ওষুধ ব্যবসায়ীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা সদরের নিজ সরাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাতেই স্থানীয় থানায় ১৩ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নজির আহমেদ ঢাকায় ওষুধের পাইকারি ব্যবসা করতেন।

মামলার এজাহারে বাদী জাফর আহমেদ অভিযোগ করেন, জমি নিয়ে প্রতিপক্ষ মমতাজ বেগম ও জুম্মনের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে।

এ ঘটনায় ইন্ধনদাতা স্থানীয় মেম্বার মোসাহেদ উল্লাহ। এ ছাড়া সামাজিকভাবে এবং থানায় একাধিক সালিশ করেও বিরোধের সমাধান হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন আসামিরা একাধিকবার নজির আহমেদকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ঘটনার রাত সাড়ে ৮টায় জুম্মন হত্যার উদ্দেশ্যে নজিরের ঘরে প্রবেশের পর নজির তাকে জাপটে ধরে চিৎকার শুরু করলে বাড়ির লোকজন এগিয়ে আসে। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজনও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নজির ও জুম্মনকে থানায় নিয়ে যায়।
থানায় নজির অসুস্থ বোধ করলে তাকে রাত ১০টায় স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেপে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নোমান মিয়া জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মমতাজ বেগম, মোসাহেদ মেম্বার, জুম্মানসহ ১৩ জনকে আসামি করে নজিরের ভাই জাফর আহমেদ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার পর জুম্মনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সরাইল থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, পূর্ব বিরোধের জেরে নজির আহমেদের ওপর প্রতিপক্ষের লোকেরা শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে পাঠানোর পর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তার ভাই জাফর আহমেদ ১৩ জনকে আসামি করে রাতেই মামলা করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ব্যবসায়ী নজির আহমেদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে, ঘটনার পরপরই পুলিশ তড়িঘড়ি করে মামলা নিয়ে নেয়। এ ব্যাপারে বাদী জাফর আহমেদ অভিযোগ করেন, পুলিশ নিজেরাই এজাহার লিখে তাকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। তিনি আরও বলেন, তাদের ধারণা, পুলিশের নির্যাতনেই নজিরের মৃত্যু হয়েছে।
তবে ওসি দাবি করেন, এজাহার বাদীকে পাঠ করিয়েই গ্রহণ করা হয়েছে। থানায় নয়, হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়েছে।