- সারাদেশ
- ভুক্তভোগী বললেন হামলা-ভাঙচুর, আ’লীগ নেতা বললেন ‘সামান্য বল প্রয়োগ’
ভুক্তভোগী বললেন হামলা-ভাঙচুর, আ’লীগ নেতা বললেন ‘সামান্য বল প্রয়োগ’

হামলায় ভেঙে গেছে দরকার লক- সমকাল
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহের জেরে যশোর শহরের ষষ্টিতলাপাড়ায় এক বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও যুবককে পিটিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে। হামলার শিকার যুবকের অভিযোগ- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার রাতে দরজা ভেঙে তাদের বাড়িতে ঢুকে এ হামলা চালানো হয়। তবে হামলা মারপিটের অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন দাবি করেন, ‘নিজের দুস্কর্ম ঢাকতে ছেলেটি মিথ্যাচার করছে। দাম্পত্য কলহ মেটাতে ও মেয়েটিকে স্বামীর ঘরে তুলে দিতে সামান্য বল প্রয়োগ করতে হয়েছে।’
এদিকে মারপিটের শিকার যুবক ইয়াসিন আরাফাত শোভন প্রাণ বাঁচাতে ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ উল্টো থানায় এনে তালাক নোটিশপ্রাপ্ত স্ত্রীর করা যৌতুক মামলায় আটক করে। শুক্রবার বিকেলে ওই মামলায় তাকে আদালতে পাঠায়। একই সময়ে দেওয়া শোভনের এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি পুলিশ।
শোভন ষষ্টিতলাপাড়ার রবিউল ইসলামের ছেলে। শোভনের স্ত্রী তহমিনা খাতুন সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে।
ইয়াসিন আরাফাত শোভন অভিযোগ করেন, অবাধ্য চলাফেরার কারণে গত ১৮ এপ্রিল তিনি স্ত্রীকে তালাক দেন। বৃহস্পতিবার ওই তালাকনামা হাতে পাওয়ার পর ওই রাতেই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের নেতৃত্বে একদল লোক তার স্ত্রী তহমিনাকে নিয়ে তাদের বাড়িতে আসেন এবং তহমিনাকে ওই বাড়িতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তারা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শোভন ও তার বাবাকে মারপিট করেন। এসময় শোভন ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে থানায় আনে। থানায় গিয়ে শোভন হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে এজাহারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির নাম থাকায় পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করেনি।
শোভনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বোরহান সিদ্দিকী বলেন, পুলিশ শোভনের মামলা রেকর্ড না করে একই সময়ে তার তালঅকপ্রাপ্ত স্ত্রীর দেওয়া এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে শোভনকে ওই মামলায় আটক করে। শুক্রবার বিকেলে এ মামলায় তাকে আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় পুলিশ পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তবে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান বলেন, ষষ্টিতলার বাড়িতে অঘটনের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ সেখানে যায়। পুলিশ দু’পক্ষের অভিযোগই হাতে পেয়েছে। শোভনের অভিযেগটিও তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ ব্যাপারেও যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আর তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর অভিযোগটি যৌতুক আইনে হওয়ায় শোভনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে শোভনের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী তহমিনা দাবি করেন, বৃহস্পতিবার তালাকনামা পেয়ে আমি রাতে বাসায় এসে ঢুকতে চাইলে তারা ঢুকতে দেয়নি। এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসে তার লোকজন দরজা খুলে দিয়েছে। এর বাইরে আর কোনো ঘটনা ঘটেনি।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘মেয়েটিকে তার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। এনিয়ে কয়েকবার সালিশ করেছি। ঈদের পর আবার বসার কথা ছিল। কিন্তু ১৮ তারিখ সে ডিভোর্স লেটার পাঠায়। বৃহস্পতিবার রাতে শিশুবাচ্চাকেসহ তহমিনাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমি বিষয়টি জেনে তাকে ফোন দিলে আমার সঙ্গে অশোভন আচরণ করে। তথন আমি ওই বাড়িতে গিয়ে দেখতে পাই মেয়েটা বাচ্চাকে নিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে মশার কামড় খাচ্ছে। দরজা খুলতে বললে খোলেনি। একপর্যায়ে কিছুটা বল প্রয়োগ করতে হয় দরজা খোলার জন্য।’
মন্তব্য করুন