কেশবপুরে বোরো মৌসুমে বিএডিসির ব্রি-৬৩ জাতের ধান আবাদ করে প্রতারিত হয়েছেন কৃষকরা। বিএডিসির ভিত্তি বীজে ভেজাল থাকায় তারা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

ক্ষেতের প্রায় ২৫ শতাংশ জমিতে অন্য জাতের ধান শনাক্ত করেছে উপজেলা কৃষি অফিস। কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ক্ষতিপূরণ চেয়ে জেলা বিএডিসির বীজ বিপণন উপপরিচালককে চিঠি দিয়েছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অর্থায়নে মজিদপুর ইউনিয়নের বাগদহা-দেউলী বিলে ও ত্রিমোহিনী ইউনিয়নের মির্জানগর বিলে গ্রুপ চাষি পর্যায়ে প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে বিএডিসির ব্রি-৬৩ জাতের ধান আবাদ করা হয়। তবে ধানের শিষ বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কৃষকের মাথায় হাত। ব্রি-৬৩ জাতের ধানের শিষ বের হওয়ার আগেই ক্ষেতের ২৫ শতাংশ ধানে অন্য জাতের শিষ বের হয়ে যায়। যার অধিকাংশই ব্রি-২৮ জাতের ধান।

উপজেলার বাগদহা গ্রামের কৃষক ইনামুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিস থেকে বিঘাপ্রতি পাঁচ কেজি করে বিএডিসির ব্রি-৬৩ জাতের ধানের ভিত্তি বীজ দেওয়া হয়। ১৫ বিঘা জমিতে এ ধানের বীজ আবাদ করলে ২৫ শতাংশ ব্রি-২৮ জাতের ধানের মিশ্রণ ধরা পড়ে। ভিত্তি বীজ উৎপাদনের জন্য কৃষি অফিসের পরামর্শে এ ধান আবাদ করা হয়েছিল। ধানে ভেজাল থাকায় বীজ উৎপাদন থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত হয়েছেন তিনি। এতে তাকে আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।

উপজেলার মির্জানগর গ্রামের কৃষক আবদুস সাত্তার বলেন, ১৫ বিঘা জমিতে বিএডিসির ব্রি-৬৩ জাতের ধানের ভিত্তি বীজ আবাদ করে প্রায় অর্ধেক অন্য জাতের ধান হয়েছে। এ ধান থেকে আর বীজ উৎপাদন সম্ভব নয়। এমন ভেজালে মাথায় হাত উঠেছে।

মজিদপুর ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল আলম বলেন, ব্রি-৬৩ জাতের ধানের আবাদ করা ক্ষেতে ব্রি-২৮ জাতের ধানের শিষ অন্তত ১৫ দিন আগেই বের হয়ে আসে। তখনই বীজে ভেজালের বিষয়টি নজরে পড়ে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুুরাজ সরকার বলেন, ক্ষেতের ২৫ শতাংশ ধান অন্য জাতের হওয়ায় কৃষকরা বীজ উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ভেজাল বীজের কারণে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। গত বুধবার ক্ষতিপূরণ চেয়ে জেলা বিএডিসির বীজ বিপণন উপপরিচালককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
যশোর জেলা বিএডিসির (বীজ বিপণন) উপপরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, কেশবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকারের দেওয়া চিঠি পেয়েছেন। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর গাজীপুরের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের একটি দলের সদস্যরা সরেজমিন যশোর এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তাদের প্রতিবেদনের পরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিষয় : ভেজাল বীজ বিএডিসির ব্রি-৬৩ বীজ বিপণন

মন্তব্য করুন