১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলের পাশে ছিলেন প্রবীণ নেতা আব্দুল কাদের ব্যাপারী। দুঃসময়ে হাল ধরেছিলেন পাঁচবিবি উপজেলা আওয়ামী লীগের। দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন ধরে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবেও দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে এবার জীবনের সবচেয়ে বড় পুরস্কার পেলেন আব্দুল কাদের ব্যাপারী।

এই প্রবীণ নেতাকে তার ভাল কাজের সন্মাননা হিসেবে গত ২১ এপ্রিল স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর শাখা-১ এর প্রজ্ঞাপনে উপ-সচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত একটি চিঠির মাধ্যমে পাঁচবিবি পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। ওইদিন সন্ধ্যায় চিঠি হাতে পেয়ে পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিব রাতেই নতুন প্রশাসকের বাড়িতে হাজির হন। তাকে গাড়িতে করে নিয়ে এসে পৌরসভার দায়িত্বও বুঝে দেন। তার আগ পর্যন্ত প্রবীণ এই নেতা জানতেন না তিনি পাঁচবিবি পৌরসভার নতুন প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী সমকালকে বলেন, ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলের পাশে ছিলেন আব্দুল কাদের ব্যাপারী। সততার কারণে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন দীর্ঘদিন ধরে। অথচ তিনি স্থানীয় নেতাকর্মীদের কাছে খুব একটা মুল্যায়ন পাননি। শারীরিক অসুস্থতা ও নিঃসঙ্গতায় বর্তমানে ঘরবন্দি তিনি। আওয়ামী লীগে বিভিন্ন সভা সমাবেশে কদর ছিল না তার। নবীন নেতাকর্মীর ভীড়ে তিনি ছিলেন অনেক দূরে। দু’দিন আগেও যেই মানুষটি বাড়িতে বসে একা একা দিন পার করছিলেন, আজ সেই মানুষটির বাড়িতে নেতাকর্মীরা ভীড় করছেন। ফুলের মালা দিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। কারণ, দুঃসময়ের অবহেলিত নেতা এখন পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব পেয়েছেন। আওয়ামী লীগে ভাল মানুষদের এভাবেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্মানিত করেন তার উদাহরণ আব্দুল কাদের ব্যাপারী।

সাবেক মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, গত ২১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর শাখা-১ এর এক প্রজ্ঞাপনে উপ-সচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠি হাতে পেয়েই নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশাসক আব্দুল কাদের ব্যাপারীর বাড়িতে যায়। তাকে সঙ্গে করে নিয়ে এসে পৌরসভায় দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছি। তিনি নতুন প্রশাসক হওয়ায় আমি খুব খুশি।

প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর আব্দুর কাদের ব্যাপারী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা ও সালাম রইল। শেষ বয়সে তিনি আমাকে যেভাবে সন্মানিত করেছেন, তা যেন আমি সহযোগীতায় ধরে রাখতে পারি। আমি পৌরবাসির সহযোগিতা নিয়ে বাকি জীবনটা যেন তাদের মাঝে বিলিয়ে দিতে পারি। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত আমি মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।