রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এমপি বলেছেন, চলতি বছরই সিরাজগঞ্জ-বগুড়া রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু হবে। এটির টেন্ডার কার্যক্রমের প্রক্রিয়া চলছে। এ রেলপথ নির্মাণ হলে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ সহজ হবে। শনিবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার রায়পুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। 

এর আগে শনিবার বগুড়া রেলওয়ে স্টেশনে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, উত্তরাঞ্চলের মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। বর্তমানে প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের শেষ দিকে অথবা আগামী বছর প্রকল্পের নির্মাণ কাজ দৃশ্যমান হবে।

শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রেলমন্ত্রী বগুড়ায় যান। শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা রেলপথের কারণে সৃষ্ট যানজট পরিস্থিতি দেখতে কয়েকটি লেভেল ক্রসিং এলাকা ঘুরে দেখেন। পরে তিনি বগুড়া রেলওয়ে স্টেশনে চলমান উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এরপর মন্ত্রী বগুড়া শহরের তিনমাথা রেলগেটের পশ্চিমে প্রস্তাবিত বগুড়া-সিরাজগঞ্জ নতুন রেলপথ নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করেন। রেলপথের কারণে বগুড়া শহরে নিত্যদিন সৃষ্ট যানজট নিরসনে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যানজট নিরসনে শহরে লেভেল ক্রসিংয়ের ওভারব্রিজ অথবা আন্ডার পাস নির্মাণের চিন্তাভাবনা রয়েছে।

বগুড়া ত্যাগ করার আগে রেলমন্ত্রী জেলার শাজাহানপুর ও শেরপুর উপজেলায় প্রস্তাবিত বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথের স্থানগুলো ঘুরে দেখেন। এ সময় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবির, প্রধান প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম সিরাজী, বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. সুবক্তাগীন, প্রকল্পের ভারতীয় ডেপুটি টিম লিডার কে শ্রীনিবাস রাও, বগুড়া জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক, পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার অসীম কুমার তালুকদার, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপুসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিকালে সিরাজগঞ্জে যান রেলমন্ত্রী। সেখানে সিরাজগঞ্জ-বগুড়া রেলপথের স্টেশন ও রেলওয়ে জংশন নির্মাণের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেন। তিনি এ সময় রায়পুর ও কালিয়া হরিপুরের দুটি স্টেশন পরিদর্শন করেন। রেলমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর নির্মাণ কাজের ৪১ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৪ সালেই এ সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।

সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কে.এম হোসেন আলী হাসান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদারসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত বর্তমানে দূরত্ব ১৯২ কিলোমিটার। আর ওই দুই জেলার মধ্যে সরাসরি রেলপথ স্থাপন করা হলে সেই দূরত্ব দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার কমে হবে ৭২ কিলোমিটার। নতুন ওই রেলপথ নির্মিত হলে বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ হয়ে ঢাকায় যাতায়াতে অন্তত ৪ ঘণ্টা সাশ্রয় হবে।