- সারাদেশ
- সড়ক পরিদর্শককে মারধরের অভিযোগে কাউন্সিলরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সড়ক পরিদর্শককে মারধরের অভিযোগে কাউন্সিলরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) সড়ক পরিদর্শককে মারধর করার অভিযোগে ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লবসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিবিসির সড়ক পরিদর্শক রাজিব হোসেন খান নিজেই রোববার রাতে বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলায় সরকারি বরিশাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামানকেও আসামি করা হয়েছে।
এর আগে রোববার বিকাল ৩টা থেকে বিসিসি কতিপয় কর্মচারী ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করলে রাত ১১টা পর্যন্ত বিএম কলেজ সড়ক দিয়ে যানবহন চলাচল বন্ধ ছিল। এদিকে বিসিসির কর্মচারীর অবস্থান নেয়ার পর পরই কাউন্সিলর বিপ্লব ও তার সমর্থকরা সিঅ্যান্ডবি সড়কে অবস্থান করে ঢাকা-কুয়কাটা মহাসড়কে যানবহন চলাচল বন্ধ করে দেন। পরে তাদের সঙ্গে বিসিসির আরও ৯ জন কাউন্সিলর যোগ দেন। তবে প্রশাসনের অনুরোধে রোববার ইফতারির আগে কাউন্সিলর ও তাদের সমর্থকরা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যান। বিপ্লবসহ ১০ জন কাউন্সিলর বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বিরোধী। তারা সদর আসনের সংসদ সদস্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের অনুসারী।
বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিসিসির সড়ক পরিদর্শক রাজীব হোসেন মামলায় তাকে কর্তব্য পালনে বাধা, আটকে রেখে মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে হুমকি দেয়ার অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, নগরের গোরস্থান রোডে ৪ তলা ভবন নির্মাণ করছেন সরকারি বরিশাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামান। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লব রোববার বিকালে সমকালকে জানান, ভবন নির্মাণ কাজ শুরুর পর থেকে সিটি করপোরেশর কর্মচারী পরিচয় দিয়ে প্রায়ই একদল যুবক ওই বাড়িতে হানা দেয় এবং নির্মাণকাজের নানা ত্রুটি দেখিয়ে কলেজশিক্ষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে আসছে। এরইমধ্যে কলেজ শিক্ষকের কাছ থেকে অর্ধ লক্ষাধিক টাকা উৎকোচও নিয়েছে ওই যুবকরা।
কাউন্সিলর বিপ্লব অভিযোগ করেন, ওই যুবকরা মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর নিয়োগ দেয়া অস্থায়ী কর্মচারী। তারা নগরের সর্বত্রই এভাবে নির্মাণাধীন বাড়ির মালিকদের কাছ থেকে উৎকোচ আদায় করে থাকেন। তার ওয়ার্ডের একজন নিরীহ শিক্ষককে এভাবে হয়রানি করায় তিনি প্রতিবাদ করেন। এটিকে অজুহাত হিসাবে তুলে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর ইন্ধনে রোববার বেলা ৩টার দিকে ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের সামনে এসে তার বিরুদ্ধে অশ্লীল ভাষায বিক্ষোভ শুরু করেন বিসিসির কতিপয় কর্মচারী। তারা বিএম কলেজ সংলগ্ন ব্যস্ততম সড়কটিতে যানবহন চলাচল বন্ধ করে দেয়।
কলেজশিক্ষক মো. কামরুজ্জামান জানান, তিনি নিয়ম মেনে নকশা অনুযায়ী বাড়ির নির্মাণ কাজ করছেন। প্রায়ই একদল যুবক এসে সেখানে হানা দেয় এবং নেটিশ দেয়াসহ নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। গত ২১ মার্চ ওই যুবকরা তার স্ত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এসময় কাউন্সিলর বিপ্লবও ঘটনাস্থলে এসে প্রতিবাদ করেন এবং তার ওয়ার্ডে কাউকে হয়রানি না করার জন্য যুবকদের হুঁশিয়ার করেন।
রোববার রাতে দায়ের হওয়া মামলায় আসামি করার পর শিক্ষক কামরুজ্জামানের ফোন বন্ধ থাকায় তার প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লব সমকালকে বলেন, তাকে হত্যার জন্য রোববার বিকালে তার কার্যালয়ে বিসিসির একদল পরিচ্ছন্নকর্মী পাঠানো হয়েছিল। তিনি সেখান থেকে আগে চলে আসায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। বিপ্লব বলেন, তিনিও আইনের আশ্রয় নিতে যাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন