- সারাদেশ
- ছাত্রকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, সেই ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
ছাত্রকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, সেই ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

সৈয়দ আকিব
সাতক্ষীরার তালায় টর্চার সেলে কলেজছাত্রকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার প্রধান আসামি সদ্য বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ আকিবকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে খুলনার ডুমুরিয়া থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সৈয়দ আকিব তালা সদরের মাঝিয়াড়া গ্রামের সৈয়দ ইদ্রিসের ছেলে। সৈয়দ আকিব তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ঘটনার পর তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান আশিক ও সাধারণ সম্পাদক সুমন হোসেন।
তালা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান জানান, ২৭ এপ্রিল রাতে কলেজছাত্রকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ ও নির্যাতন মামলার প্রধান আসামি সৈয়দ আকিবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার বাকি চার আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্র তালা সদরের জাতপুর গ্রামের এক নার্সারি ব্যবসায়ীর ছেলে। তিনি এইচএসসি শেষ করে খুলনায় একটি কোচিং সেন্টারে পড়ছেন। রোববার (২৪ এপ্রিল) দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তালা সরকারি কলেজের একটি কক্ষের টর্চার সেলে বেঁধে নির্যাতন করা হয় ওই কলেজছাত্রকে।
বিবস্ত্র করে মারপিট, ভিডিও ধারণ ও কলেজছাত্রের মাকে ফোনে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ছেলেকে উদ্ধার করে তালা হাসপাতালে ভর্তির পর রাতেই অভিযুক্ত পাঁচজনের নাম উলেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনকে আসামি করে তালা থানায় মামলা করেন নির্যাতনের শিকার ছাত্রের বাবা।
আসামিরা হলেন, তালার মাঝিয়াড়া গ্রামের দালাল সৈয়দ ইদ্রিসের ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ আকিব (২৫), হরিশচন্দ্রকাটি গ্রামের গণেশ চক্রবর্তীর ছেলে শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৌমিত্র চক্রবর্তী (৩২), তালা গার্লস স্কুলের পাশের বাসিন্দা ছাত্রলীগ কর্মী জে আর সুমন (২৫), তালার মহান্দি গ্রামের অশোক দাসের ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী জয় (২৪) ও তালা সদরের নজির শেখের ছেলে ছাত্রলীগকর্মী নাহিদ হাসান উৎস (২৪)।
ঘটনার পরদিন সোমবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানের হস্তক্ষেপে তালা থানায় অভিযুক্ত চার ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও এক শ্রমিক লীগ নেতার বিরুদ্ধে থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়। ওই রাতেই উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি থেকে সৈয়দ আকিবকে বহিষ্কার করে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করেন জেলা কমিটি।
প্রধান আসামি গ্রেফতার হওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্রের বাবা বলেন, আমি আশঙ্কা করেছিলাম যেহেতু সরকারদলীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে সেহেতু এ ঘটনার আমি কোনো বিচার পাব না। থানায় মামলা দিতে গেলে থানার মধ্যে আকিবের বাবা দালাল ইদ্রিস ও শাহপুর গ্রামের দালাল শাহিনুর রহমান আমাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছিল। বলছিল, উল্টো মামলা দিয়ে ফাঁসাবে এতে আমি আতঙ্কিত ছিলাম।
মন্তব্য করুন