শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় নবজাতক নাতিকে দেখতে গিয়ে মেয়েজামাইয়ের হাতে খুন হয়েছেন জবেদা বেগম (৪৩) নামে এক নারী। মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের শুকুর চৌকিদারকান্দী গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

জবেদা বেগম একই উপজেলার সেনেরচর বয়াতিকান্দি গ্রামের বাচ্চু দেওয়ানের স্ত্রী। ঘটনার পর মেয়েজামাই পারভেজ খালাসিসহ বাড়ির লোকজন পালিয়ে গেছেন। পারভেজের মা মঞ্জিলা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে জবেদা বেগম তার জা হাসিয়া বেগমকে সঙ্গে নিয়ে নবজাতক নাতিকে দেখতে জামাইবাড়ি যান। শাশুড়িকে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন জামাই পারভেজ। গালাগাল করতে নিষেধ করায় পারভেজ তার শ্বাশুড়ির মাথায় কাঠ দিয়ে আঘাত করে।

এ সময় জবেদা বেগম ও হাসিয়া বেগমকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন পারভেজ, তার বাবা সালাম খালাসি ও মঞ্জিলা বেগম। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করলে চিকিৎসক জবেদা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার পর পারভেজ ও তার বাবা পালিয়ে গেলেও মা মঞ্জিলা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জবেদা বেগমের ভাই আব্দুল হালিম মাতবর বাদী হয়ে পারভেজ ও বাবা-মাসহ ৪ জনকে আসামি করে জাজিরা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহতের মেয়ে লিমা আক্তার বলেন, এক মাস আগে সিজারে আমার পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। আজ সকালে আমার মা ও কাকি সন্তানকে দেখতে আমার স্বামীর বাড়ি আসেন। মাকে দেখে আমার স্বামী পারভেজ উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করেন। মা গালাগাল দিতে নিষেধ করায় আমার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে।

তিনি আরও বলেন, বিয়ের পর থেকেই পারভেজ আমার পরিবারের কাছে যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। এ পর্যন্ত তাকে ৪ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়া হয়েছে। আমার সন্তান প্রসবের সময় সিজার করতে নাকি ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। পারভেজ ওই ২ লাখ টাকা আমার পরিবারের কাছে দাবি করে আসছে। ২ লাখ টাকা নিয়ে যেতে পারেনি বলে পারভেজ ও তার বাবা-মা আমার মাকে হত্যা করেছে।

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু মন্ডল বলেন,  এ ঘটনায় আমরা একজনকে আটক করেছি। মামলা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।