বেসরকারি শিক্ষকদের পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা প্রদান ও মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের লক্ষ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষাখাতে মোট বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মাদরাসা জেনারেল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমজিটি)। 

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ মাদরাসা জেনারেল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমজিটি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হারুন অর রশিদ। 

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রাথমিক শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিল ২৬ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৬ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা। অথচ অথচ কারিগরি ও মাদরাসা দুইটি বিভাগে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। যার কারণে মাদরাসা শিক্ষায় তেমন কোন উন্নতি করা হয়নি। তাই ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বাজেটে কারিগরি ও মাদরাসা ২টি বিভাগের বাজেট ১৫ হাজার কোটি টাকা এবং মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের লক্ষ্যে আসন্ন বাজেটে শিক্ষাখাতে মোট বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দের প্রয়োজন রয়েছে। 

হারুন অর রশিদ আরও বলেন, শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতির অগ্রগতি সম্ভব নয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তাই শিক্ষাখাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দের প্রয়োজন। 

এছাড়া সংবাদ সম্মেলন থেকে সাত দফা দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলো হলো, বেসরকারি শিক্ষকদের পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা প্রদান। আলিম, ফাযিল ও কামিল মাদরাসায় প্রভাষকদের ৮ বছর পূর্তিতে ৫০% হিসেবে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি প্রদান ও ১৬ বছর পূর্ণ হলে সকল প্রভাষকদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি প্রদান। সরকারি নিয়মে শিক্ষকদের মেডিকেল ও বাড়ি ভাড়া প্রদান। বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি প্রথা চালু। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা এমপিওভুক্তকরণ এবং নন-এম্পিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণ। মাদরাসার প্রশাসনিক পদে জেনারেল শিক্ষকদের নিয়োগ প্রদান এবং মাদরাসাসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ। 

অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের (স্বাশিপ) সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম সাজু বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে শুধু মুখে নয়, বাজেটেও তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। শিক্ষখাতে আমাদের অনেক অর্জনের পাশাপাশি আমাদের কিছু অপ্রাপ্তি রয়ে গেছে। সকল অপ্রাপ্তি যদি প্রাপ্তিতে রুপান্তর না হয় তাহলে শিক্ষার মান বাড়বেনা।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার ৯৮ শতাংশ কিন্তু বেসরকারির হাতে। শিক্ষা ছাড়া ডেল্টাপ্ল্যান বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আমরা চাই টোটাল শিক্ষাকে জাতীয়করণ করা হোক। আসন্ন বাজেটে শিক্ষাখাতে ২০ শতাংশ বরাদ্দ রাখতে হবে। ২০ শতাংশ না হলেও অন্তত ১৫ শতাংশ রাখতে হবে।

শাহজাহান আলম আরও বলেন, এটা আমার কথা নয়, বঙ্গবন্ধুই শিক্ষা খাতে ২০ শতাংশের বাজেট বরাদ্দের কথা বলে গেছেন। জাতীয়করণ হলে শিক্ষার মান বাড়বে, গরিব ও মেহনতি মানুষের সন্তানরা নামমাত্র টাকায় পড়াশোনা করতে পারবে।