নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কুলখানির অনুষ্ঠানে বিবাদের জের ধরে সন্ত্রাসী হামলায় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার দুপুরে রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের ভাষ্য, রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে টার্গেট করে ওই সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রফিকুল ইসলাম কায়েতপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। একই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মোশারফ ভুঁইয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তার বিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে আজ হামলা চালায়।

রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ সমকালকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরুদ্ধদের উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

রংধনু গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আহমেদ অপু সমকালকে বলেন, চাচার বাড়িতে কুলখানির অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়েছিলাম আমরা। নাওড়া এলাকার মসজিদে জুমার নামাজ পড়ে আমি আমার সন্তানের কবর জিয়ারত করতে যাই। বাবা (চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম) ছিলেন মুসা ভাইয়ের বাড়িতে। সেখানে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়ি ঘিরে হামলা চালানো হয়। গুলির শব্দ শুনে আমি এগিয়ে যাই। কিন্তু নিরাপত্তাকর্মীরা ওই পরিস্থিতি থেকে আমাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়। পরে জানতে পারি আমার সহকারী একান্ত সচিব জিহাদ গাজী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আহত হয়েছে আরও বেশ কয়েকজন। স্থানীয় 'সন্ত্রাসী' মোশারফের লোকজন ওই হামলা চালায়।

আহতদের মধ্যে জিহাদ গাজীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরে ১০টি গুলি লেগেছে। তিনি সমকালকে বলেন, হামলাকারীদের ১৫-২০ জনের হাতে অবৈধ অস্ত্র ছিল। এ ছাড়া দেশীয় ধারালো অস্ত্রও ছিল। তারা ককটেলের বিস্ফোরণও ঘটিয়েছে।

স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার দুপুরে নাওড়া এলাকায় মুসা নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে কুলখানির অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন রফিকুল ইসলাম। এ নিয়ে মুসার সঙ্গে রাগারাগি করেন মোশারফ ভুঁইয়ার ভাই আনোয়ার ভুঁইয়া। দু'জনের বাগবিতণ্ডার পর আনোয়ার ও মোশারফ নিজেদের লোকজন নিয়ে মুসার বাড়িতে সশস্ত্র হামলা ও ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তারা বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। ঘটনার সময় মোশারফ বাহিনীর লোকজন রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজনকে একটি ঘরে আটকে রাখে। খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। ওই হামলায় জিহাদ, লিখন ও লিয়াকত নামে তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের ঢামেক হাসপাতালসহ অন্যান্য স্থানে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে মোশারফ বাহিনী।

অভিযোগ প্রসঙ্গে মোশারফ হোসেন বলেন, রফিকুল ইসলাম তার লোকজন নিয়ে হামলার উদ্দেশ্যে আমার বাড়ির দিকে এলে এলাকাবাসী তাদের ঘিরে ফেলে।

এদিকে এলাকাবাসী দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হওয়ার কথা বললেও রফিকুল ইসলামের লোকজনের দাবি, তাদের কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না। তারা এ ঘটনার শিকার।