নারায়ণগঞ্জের বন্দরে আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ায় রুপা আক্তার (২২) নামে এক তরুণী আত্মহত্যার ঘটনায় স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বারসহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার রাত ও মঙ্গলবার দুপুরে বন্দরের আলীনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুল মোমেন কঁচি ও একই এলাকার দবির হোসেন। গ্রেপ্তার দু’জন ধর্ষণের শিকার তরুণীর পরিবারকে ঘটনাটির মীমাংসার জন্য চাপ প্রয়োগ করেছিলেন।

আপস না করলে ওই তরুণীর আপত্তিকর ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি এ দু’জনই প্রথম দিয়েছিলেন। তাদের নিষেধ উপেক্ষা করে ধর্ষণের শিকার রুপার পরিবার মামলা দায়ের করায় আপত্তিকর ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয় ধর্ষকের স্ত্রী ও ভাগনে।

বন্দর থানার ওসি (তদন্ত) মো. মহসীন বলেন, গত বৃহস্পতিবারই ধর্ষণ মামলা দায়ের হয়েছে। গত সোমবার বিচার সালিশ বসিয়ে ভুক্তভোগীকে অপমান করে আত্মহত্যার প্ররোচনা ও ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার দায়ে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়।

ওই মামলায় মেম্বারের পাশাপাশি ধর্ষক নুরুল আমিন, ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে নুরুল আমিনের স্ত্রী শ্যামলী বেগম, ভাগনে ইব্রাহিমসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

উল্লেখ্য, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রুপাকে ধর্ষণ করে নুরুল আমিন। কিন্তু বিয়ের কথা বললে টালবাহানা শুরু করে। সর্বশেষ ২২ মে রুপার বাবা-মা কাজে চলে গেলে নুরুল আমিন আবারো তার বাসায় এসে তাকে ধর্ষণ করে। ওই সময় রুপা আবার তাকে বিয়ের কথা বললে নুরুল অপারগতা প্রকাশ করে। বিষয়টি রুপা তার মাকে জানালে গত বৃহস্পতিবার তার মা বন্দর থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলার খবর জানতে পেরে ধর্ষকের পক্ষ হয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার কঁচি ও অপর সালিশকারী দবির ঘটনাটি আপস করতে চাপ দেয় রূপার পরিবারকে। মীমাংসা না করলে রুপার আপত্তিকর ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন তারা।

আপস না করায় ক্ষুব্দ হয়ে ধর্ষকের স্ত্রী শ্যামলী বেগম ও ভাগনে ইব্রাহিম রুপার আপত্তিকর ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। এ কারণে লোকলজ্জা আর অভিমানে রূপা গত সোমবার সকালে নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।