- সারাদেশ
- নিখোঁজদের সন্ধানে হন্যে হয়ে ছুটছেন অনেকেই
সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি
নিখোঁজদের সন্ধানে হন্যে হয়ে ছুটছেন অনেকেই

বিস্ফোরণে নিখোঁজ সন্তান মোহাম্মদ আক্তারের খোঁজে প্রতিদিন চমেক হাসপাতালে এসে অপেক্ষায় থাকেন বাবা
সীতাকুণ্ডে কনটেইনার বিস্ফোরণে নিহতদের মধ্যে মঙ্গলবার পরিচয় শনাক্ত হওয়া ২৬ জনের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। আর নিখোঁজ থাকাদের পরিচয় শনাক্ত করতে ২২ লাশের বিপরীতে তাদের পরিবারের ৩৯ সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করেছে সিআইডি।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে বুথ স্থাপন করে দ্বিতীয় দিনের মতো নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করেন সিআইডির সদস্যরা।
চট্টগ্রাম সিআইডি ক্রাইমসিন ইউনিটের পরিদর্শক মিজান ফেরদাউস জানান, পরিচয় শনাক্ত করতে দ্বিতীয় দিনের মতো নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ২২ জনের বিপরীতে ৩৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মরদেহের সঙ্গে ডিএনএ বিশ্লেষণ করে পরিচয় শনাক্ত করা হবে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা বলেন, এ পর্যন্ত পরিচয় শনাক্ত হওয়া ২৬ জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিদের পরিচয় শনাক্তের কাজ চলমান আছে।
নিখোঁজদের সন্ধানে ছুটছেন স্বজনরা
চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ‘সন্ধান চাই’ ব্যানার টাঙিয়ে নিখোঁজ প্রিয় মানুষটির সন্ধানে মঙ্গলবারও সকাল থেকে অনেকে ছুটে আসেন। তাদের একজন নিখোঁজ আব্দুল মনির হোসেন। বিএম ডিপোতে অপারেটরের কাজ করতেন তিনি। বিস্ফোরণের ঘটনার তিন দিন পার হয়ে গেলেও কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না তার।

ছেলের লাশের জন্য বাবা আব্দুল হান্নান ডিএনএ দিয়ে অপেক্ষায় আছেন। বাসায় আট মাস আগে বিয়ে করা বউ স্বামীর জন্য কাঁদতে কাঁদতে অপেক্ষারত। চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে মনিরের সন্ধান পেতে ব্যানার টাঙিয়ে বসে আছেন ভাই ও স্বজনেরা।
আবদুল মনিরের স্বজনরা বলেন, তিন দিন হয়ে গেলেও তার কোনো সন্ধান পাচ্ছি না। ডিপোতে সে ক্রেনের চালকের কাজ করতো। শনিবার রাতে তার স্ত্রীর সাথে রাত নয়টায় শেষ কথা হয় তার। তখন সে বলে ‘এখানে আগুন লাগছে; বেশি কথা বলতে পারবো না। এরপর আর কথা হয় নাই।’ এ পর্যন্ত তার সন্ধান পেতে আমরা তিনটা হাসপাতালে খবর নিয়েছি, তবুও কোনো খবর পাচ্ছিনা।’

এভাবে আবদুল মনির হোসেনের মতো নিখোঁজ হওয়া প্রিয় অনেকের খোঁজে মঙ্গলবারও সকাল থেকে হন্যে হয়ে ছুটেছেন অনেক স্বজন। নিখোঁজ ব্যক্তির ছবি, ব্যানার কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে নিয়ে এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছুটে গেছেন তারা। কিন্তু কারও কাছ থেকে মিলেনি সঠিক তথ্য।
তাই পরিচয় শনাক্ত করতে অনেকেই প্রশাসনকে জমা দিয়েছেন রক্তের নমুনাও। নিখোঁজদের এই তালিকায় আছেন ফারুক নামের মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকও। মঙ্গলবার তাকে খুঁজতে চমেক হাসপাতালে ছুটে আসেন তার ভাই মোহাম্মদ কায়েস।
মন্তব্য করুন