- সারাদেশ
- ফতুল্লার এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে অভিযোগ
ফতুল্লার এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত
৭১ বছরের বৃদ্ধ মো. ফজলুল হক। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা রাজস্ব সার্কেল অফিসে তার ও নাতির জমি নিয়ে সমস্যা সমাধানে গিয়েছিলেন। তিনি কল্পনাও করতে পারেননি, তার মতো একজন বয়স্ককে একজন সরকারি কর্মকর্তা দালাল আখ্যা দিয়ে নিষ্ঠুর শাস্তি দেবেন। তাকে আড়াই ঘণ্টা অফিসের নাজিরের কক্ষে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পা ব্যথায় অনেকবার অনুরোধ করেও বসার অনুমতি পাননি ফজলুল হক। ওই সময় তার চল্লিশোর্ধ্ব নাতিকেও দাঁড় করিয়ে রাখেন ফতুল্লার এসিল্যান্ড আবু বক্কর।
এ ঘটনায় ৫ জুন ফজলুল হক ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার খলিলুর রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে ফজলুল হক উল্লেখ করেন, তিনি তার নাতি মো. আতিকুল ইসলামকে নিয়ে ২ জুন উভয়ের জমির সমস্যা সমাধানে লিখিত আবেদন নিয়ে ফতুল্লা সার্কেল এসিল্যান্ড আবু বক্করের কার্যালয়ে যান। সমস্যার কথা জানানোর পর আবেদন নিতে বলা হলেও তিনি তা গ্রহণ না করে নাজিরের কাছে পাঠান। এরই মধ্যে এসিল্যান্ড অফিসের দালাল অলি মিয়া, শামীম মিয়া ও জামান মিয়া তার পিছু নেয় এবং তারা বলে— কিছু টাকা দিলে কাজ হবে। তিনি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় অফিস থেকে বের হলে অলি মিয়াকে দিয়ে তাদের এসিল্যান্ডের অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে দালাল আখ্যা দেওয়া হয়।
অভিযোগে তিনি বলেন, আমি একজন বয়স্ক লোক, আমাকে জেলে দেওয়ার ভয় দেখায় এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এসিল্যান্ডের নির্দেশে পার্শ্ববর্তী নাজিরের রুমে নিয়ে আটকে রেখে ওইদিন দুপুর ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত আমাদের শাস্তিস্বরূপ দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। আমি ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি।
ফজলুল হক সমকালকে বলেন, পা ব্যথায় বহুবার বসার অনুমতি চাইলেও বসতে দেওয়া হয়নি। আমার অভিযোগ সত্য না মিথ্যা তা তদন্ত করার জন্য ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা সার্কেলের এসিল্যান্ড আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। মূলত তিনি একজন আইনজীবীর সহকারী। তিনি এ অফিসে সেবাগ্রহীতাদের হয়ে কাজ করেন। অতীতেও এজন্য তাকে সতর্ক করা হয়েছিল। ঘটনার দিন তিনি একজনকে নাতি পরিচয় দিয়ে নিয়ে আসেন। কিন্তু সঙ্গে থাকা ব্যক্তি তার নাতি ছিলেন না। এ কারণে আমি তাকে নাজিরের কক্ষে বসতে বলি। পরে ওই বৃদ্ধ আমার কাছে এসে ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। সিনিয়র সিটিজেন হওয়ায় আমি তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করিনি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তে আমি একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে দায়িত্ব দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন