- সারাদেশ
- নারী ইউপি সদস্যকে শ্লীলতাহানি-হুমকি, ২ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা
নারী ইউপি সদস্যকে শ্লীলতাহানি-হুমকি, ২ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা

ইউপি সদস্য তোফাজ্জুল হোসেন ও সোহান আহমদ
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত নারী আসনের এক সদস্যকে উত্যক্ত ও শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠেছে একই ইউনিয়নের দুই সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা করেছেন ওই নারী সদস্য রেবা রানী। একইসঙ্গে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন তিনি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউপির ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের নারী সদস্য রেবা রানী গত ১ জুন নিজের কর্যালয়ে গেলে ইউপি সদস্য তোফাজ্জুল হোসেন ও সোহান আহমদ তার সঙ্গে শ্লীলতাহানি করেন। তাকে অশালীন কথাবার্তা বলেন। এভাবে তাকে প্রায়ই শ্লীলতাহানি করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে রেবা রানীকে ওই দুই সদস্য গালিগালাজ ও মারধর করার হুমকি দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা যায়, রেবা রানী এ ব্যাপারে প্রথমে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এতে ওই দুই ইউপি সদস্য আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন। তাকে বাড়িতে গিয়ে এবং ফোনে বারবার হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয়, অভিযোগ প্রত্যাহার না করলে মেরে ফেলা হবে।
এরপর নিরাপত্তা চেয়ে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে অভিযোগ দেন রেবা রানী। পরে অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দেন ওসি ডালিম আহমদ। ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক (এসআই) আবু বক্কর মামলাটি তদন্ত করছেন।
পুলিশি তদন্তের পরিপেক্ষিতে ইউনিয়নটির চেয়ারম্যান ছালিক মিয়া রাতারাতি মিটিং ডাকেন। গত বৃহস্পতিবার ইউপি সদস্যদের উপস্থিতিতে বাদী-বিবাদীর বক্তব্য শুনেন তিনি। এছাড়া এ নিয়ে এলাকায়ও সমালোচনা হচ্ছে।
রেবা রানী ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বলেন, তার ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে। পরে সব শুনে চেয়ারম্যান তাকে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দেন এবং অভিযুক্তদের তার সামনেই বিষয়টি নিয়ে জেরা করেন।
রেবা রানী বলেন, আমি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারী। আমার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রয়োজন। খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি। আসামিরা আমাকে হুমকি-দামকি দিচ্ছেন।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ইউপি সদস্য তোফাজ্জুল হোসেন ও সোহান আহমদ। তারা বলেন, তাকে আমরা কোনো হুমকি দিইনি। বিষয়টি উদ্দেশ্যমূলক। আমাদের চেয়ারম্যান এটি মীমাংশা করে দেবেন বলেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আবু বক্কর বলেন, আমরা প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। ওই নারী সদস্যকে অসহায় পেয়ে তারা এ আচরণ করেছেন। এখন আবার আপস করার চেষ্টা করছেন।
দীঘলবাক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছালিক মিয়া বলেন, আমি পরিষদে ছিলাম না। সদস্যরা কথা কাটাকাটি করেছেন। বিষয়টি আমি মীমাংসা করে দেওয়ার চেষ্টা করছি।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহি উদ্দিন বলেন, আমরা ঘটনাটির ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করা হচ্ছে। স্থানীয় চেয়ারম্যানকে একটি প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন