- সারাদেশ
- উগ্রবাদ প্রতিরোধে অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার আহবান
ক্র্যাব-সিটিটিসি প্রশিক্ষণ কর্মশালা
উগ্রবাদ প্রতিরোধে অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার আহবান

কর্মশালায় প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে সনদপত্র তুলে দিচ্ছেন সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান
জঙ্গি কার্যক্রম প্রতিরোধে সন্তানের হঠাৎ বদলে যাওয়ার বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করার অনুরোধ এসেছে জঙ্গি দমনে যুক্ত পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। রোববার ঢাকায় এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এই অনুরোধ জানান কর্মকর্তারা।
ওই অনুষ্ঠানে সিটিটিসি প্রধান ও ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, উগ্রবাদ প্রতিরোধে সফলতার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে নিরাপদ দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। নতুন করে যাতে এই সন্ত্রাসীরা আর মাথাচাড়া দিতে না পারে সে জন্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরীর পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতনতা জরুরি।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) আয়োজনে সিটিটিসির সহযোগিতায় 'উগ্রবাদ প্রতিরোধে গণমাধ্যমকর্মীর ভূমিকা' শীর্ষক ওই প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়। এতে ক্র্যাবের অর্ধশতাধিক সদস্য অংশ নেন।
ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমালের সভাপতিত্বে ওই কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু।
কর্মশালায় প্রশিক্ষক ছিলেন সিটিটিসির ডিসি মাহফুজুল ইসলাম, পুলিশ সুপার নাজমুল হক, সিটিটিসির সহকারি কমিশনার নাজমুল ইসলাম, সিনিয়র সাংবাদিক জুলফিকার আলী মানিক।
অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ক্র্যাবের প্রশিক্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক সাজ্জাদ মাহমুদ খান। ওই সময় সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক ইমরান হোসেন সুমন, অর্থ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান, দপ্তর সম্পাদক ইসমাইল হুসাইন ইমু, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রুদ্র রাসেল, কার্য নির্বাহী সদস্য আমানুর রহমান ও সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটিটিসি প্রধান বলেন, দেশ থেকে জঙ্গিবাদ যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে তা বিশ্বের রোল মডেল। শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে কোনো জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেনি।
প্রথমবারের মত জঙ্গিবাদের উপর ব্যাপক গবেষণা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরইমধ্যে ৩৪টি গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে। উগ্রবাদ বিষয়ে কাজ করা গণমাধ্যমকর্মীদের আরও যত্মশীল হওয়ার আহবান জানান তিনি। পাশাপাশি সিটিটিসির পক্ষ থেকে জঙ্গিবাদ নিয়ে বিশেষ ফেলোশিপের ব্যবস্থা করা হবে উল্লেখ করেন তিনি।
'আমরা সব জঙ্গি আস্তানা গুড়িয়ে দিয়েছি। আস্তানা যদি গুড়িয়ে দেওয়া না যেত তাহলে আরও বড় বড় ঘটনা ঘটতে পারত। এটা আমাদের সফলতা'-বলেন তিনি।
যারা রেডিকালাইজড হয়ে জঙ্গিবাদে জড়িয়েছে, একদিনেই তারা বদলে যায়নি জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, 'এরা দিনের পর দিন বদল এনেছে।' এদের বাসা থেকে বের করতে বা হিযরতে কারা অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে- গণমাধ্যম কর্মীদের তা খুঁজে বের করার পরামর্শও দেন তিনি।
ডিআরইউর সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু বলেন, জঙ্গিবাদ নিয়ে প্রতিবেদন করতে হলে স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে বৈশ্বিক বিষয়গুলোও জানতে হবে। উগ্রবাদ বিষয়ক প্রতিবেদন লেখার ক্ষেত্রে শব্দ চয়নে বিশেষ সতর্কতার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল বলেন, জঙ্গিবাদ পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন করলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় জঙ্গিবাদে জড়ানো ব্যক্তিটি।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ বা উগ্রবাদের বিষয়ে আমরা যে প্রতিবেদন করি তা থেকেও উগ্রবাদী সংগঠনগুলো বিভিন্ন তথ্য নেয়। ফলে শব্দ প্রয়োগে, তথ্য সন্নিবেশের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হতে হবে। আজকের প্রশিক্ষণ কর্মশালা থেকে অর্জিত কৌশলগুলো ভবিষ্যতে প্রতিবেদন তৈরিতে কাজে আসবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মন্তব্য করুন