- সারাদেশ
- ভোট চাওয়ার শেষ দিন আজ, নিরাপত্তা বলয়
কুমিল্লা সিটি নির্বাচন
ভোট চাওয়ার শেষ দিন আজ, নিরাপত্তা বলয়

ফুরিয়ে আসছে সময়। এক দরজা থেকে আরেক দরজা; ভোটারের হাতে হাত রেখে করমর্দনেও কেমন যেন গতি। প্রার্থীরা সেকেন্ড-মিনিটকেও দাম দিচ্ছেন এখন। নগরবাসীকে দেখাচ্ছেন স্বপ্ন; ওড়াচ্ছেন প্রতিশ্রুতির ফানুস; দিচ্ছেন ওয়াদা। কারণ আজ সোমবার রাতে বাজবে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে প্রচারণা বন্ধের ঘণ্টা। শেষ সময়ের বিরামহীন প্রচারণায় মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ছুটছেন তো ছুটছেন। পাশাপাশি মেয়র প্রার্থীদের একে অপরের নামে বিষোদ্গার থামেনি এখনও।
শেষ সময়ে এসে নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী অনেকেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের পক্ষে গতকাল রোববার সকাল থেকে প্রচারণায় নেমেছেন। এদিকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে রিটার্নিং অফিসার ও স্থানীয় প্রশাসন সব রকম প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণও গুছিয়ে আনা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের একটি দল নগরীর ১০৫ কেন্দ্র পরিদর্শনে মাঠে নেমেছে। ভোটারদের মক ভোটিংসহ আনুষ্ঠানিক সব কার্যক্রম আজ সোমবারের মধ্যে শেষ হচ্ছে। সব মিলিয়ে কঠোর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হচ্ছে কুমিল্লা নগরী।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজ থেকে পুরো নগরীতে প্রায় ৩ হাজার পুলিশ সদস্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে নামবে। কেন্দ্রের বাইরে নগরীর অন্তত ২০০ পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ দল ও তল্লাশি চৌকি গঠন করে অপরাধ-সন্ত্রাস দমন করে ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখা হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, আজ থেকে ৫০ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ১২ প্লাটুন বিজিবি, আনসারের ১০টি দল ও র্যাবের ২৮টি দল মাঠে কাজ করবে। ছয়জন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এসব দলের তদারকি করবেন।
শেষ মুহূর্তে এসে ভোটের মাঠে চলছে টানটান উত্তেজনা। বিশেষ করে মেয়র পদে হেভিওয়েট তিন প্রার্থীর প্রচার এখন তুঙ্গে। প্রার্থীরা নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে নানা কৌশলে একে অপরের সমালোচনায় মুখর। সংশয়-শঙ্কার মধ্যেই তিন হেভিওয়েট প্রার্থীসহ তাঁদের নেতাকর্মীরা কষছেন ভোটের অঙ্ক।
প্রার্থীদের গণসংযোগ: নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত ও তাঁর স্ত্রী আলাদাভাবে নগরীর বাগিচাগাঁও, রেলস্টেশন, শাসনগাছা, অমোকতলা, স্কাউট মার্কেট, স্টেডিয়াম মার্কেট, শাকতলা, সাহাপাড়া, দয়াপুর, বালধুমসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ, উঠান বৈঠক ও পথসভা করেন। এ সময় রিফাত বলেন, নগরীতে এখন নৌকার পক্ষে গণজোয়ার চলছে। এতে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত।
টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু ও তাঁর সহধর্মিণী আলাদাভাবে নগরীর দারোগাবাড়ি, লইপুরা, বল্লভপুর, ধনেশ্বর, আশ্রাফপুর এলাকায় গণসংযোগ, পথসভা ও উঠান বৈঠক করেন। প্রচারণাকালে সাক্কু বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে তিনি এখনও শঙ্কিত। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি বিজয়ী হবেন।
ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার তাঁর কর্মীদের নিয়ে নগরীর অশোকতলা, দক্ষিণ চর্থা, গাংচর, চকবাজারসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড এলাকায় গণসংযোগ, পথসভা ও উঠান বৈঠক করেন। এ সময় তিনি বলেন, আধুনিক সিটি প্রতিষ্ঠায় আমি নগরবাসীকে যে স্বপ্ন দেখিয়েছি, সেই স্বপ্নযাত্রায় নগরবাসী আমার পাশে থাকবে।
সাক্কুর ইশতেহারে ১৮ দফা: শেষ সময়ে এসে ১৮ দফা নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছেন সাক্কু। গতকাল দুপুরে নগরীর নানুয়ারদীঘির পাড়ের নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ইশতেহারে দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নানা প্রকল্প হাতে নেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন।
শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবি সুজনের: প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন এবং অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন কুমিল্লা মহানগর ও জেলা শাখা।
মন্তব্য করুন