- সারাদেশ
- সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা তো আছেই
কুমিল্লা সিটি নির্বাচন
সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা তো আছেই

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে আজই প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তিন মেয়র প্রার্থীর পরস্পরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি চলছেই। রাজনৈতিক মেরূকরণ ও নানা বাস্তবতায় তিন মেয়র প্রার্থীরই ভাবনার কেন্দ্রজুড়ে রয়েছেন কুমিল্লা সদরের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে এসে প্রতিদ্বন্দ্বী তিন মেয়র প্রার্থী অকপটে বলেছেন তাঁদের ভাবনা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাব্বির নেওয়াজ
মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার। তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। পরে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হন। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় এরই মধ্যে বহিস্কারের খড়গও নেমে এসেছে তার ওপর
সমকাল: ৫ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে কনিষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে আপনি কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
কায়সার: ইনশাল্লাহ আপনারা মাঠে খবর নিয়ে দেখেন- আমি রাস্তায় হেঁটে গেলে এখন পেছনে দেখি মিছিল হয়ে যায়। অনেক লোকের সমাগমের কারণে কয়েক দফায় জরিমানাও দিতে হয়েছে। ভোটারদের মাঝে বেশ উচ্ছ্বাস দেখতে পাচ্ছি।
সমকাল: বিজয়ী হতে পারলে আপনার প্রধান কাজ কী হবে?
কায়সার: আপনারা আমার ইশতেহার দেখেছেন, এখানে আমি প্রধান প্রধান যেসব সমস্যা শনাক্ত করেছি, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো যানজট, জলাবদ্ধতা, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত নগরী গড়ে তোলা। আধা ঘণ্টার বৃষ্টিতে নগরী তলিয়ে যায়। ১০ বছরে কোটি কোটি উন্নয়নের বরাদ্দ কাজে আসেনি। এতে জনগণের ভোগান্তি বেড়েই চলছে। তাই নির্বাচিত হলে যানজট ও জলাবদ্ধতামুক্ত করাই হবে প্রধান কাজ।
সমকাল: আপনাদের দলেরই মেয়র ছিলেন সাক্কু। তাঁর দুই মেয়াদের দায়িত্ব পালন কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
কায়সার: তিনি (সাক্কু) আমাদের দলের ছিলেন। তবে যেদিন ২০১২ সালে প্রথম মেয়র হলেন, সেই দিন থেকে তিনি আওয়ামী লীগের মেয়র হিসেবে কাজ শুরু করেছেন। তাঁর (সাক্কু) নেতাকর্মীদের দ্বারা বিএনপির শত শত নেতাকর্মী মামলা-হামলার শিকার হয়ে কারাগারে যেতে হয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলেমিশেই সিটির টাকা লোপাট করেছেন। ৬০/৪০ ভাগ করেছেন। তাই এবারের নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ ভোটাররা সাক্কুকে প্রত্যাখান করবে।
সমকাল: নির্বাচনে কালো টাকার একটি অভিযোগ উঠেছে আপনাদের বিরুদ্ধে...
কায়সার: কালো টাকা আমার নেই। নৌকার প্রার্থী রিফাত ও সাক্কু কালো টাকা বিলি করছে বলে বিভিন্ন স্থান থেকে আমার কাছে খবর আসছে। বিষয়টি প্রশাসন ইচ্ছে করলে দেখতে পারে।
সমকাল: ভোটের মাঠে আপনাদের দলীয় কোন্দল প্রতিপক্ষ নৌকার প্রার্থী সুযোগ নেবে কিনা?
কায়সার: তিনি (সাক্কু) প্রচারণাকালে বলেছেন আমার নাকি বয়স কম, কিন্তু তিনি হয়তো জানেন না আমার বয়সী দেশে অনেক এমপি আছেন। আমি যত বছর রাজনীতিতে রয়েছি এর কম বছর রাজনীতিতে থেকে বিশ্বের অনেক দেশে রাষ্ট্রপতিও হয়েছেন। তাই ভোটের মাঠে দলীয় এ বিরোধ কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে বিশ্বাস করি।
সমকাল: দল ছেড়ে প্রার্থী হলেন কেন ?
কায়সার: আমার দলের ইভিএম এবং এ সরকারের নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা নেই। তবুও আমার হাজার হাজার সমর্থক ও অনুসারীর অনুরোধে প্রার্থী হতে হয়েছে। আশা করি ভোটের মাঠে এর প্রতিফলন দেখতে পাব।
সমকাল: শুরু থেকেই আপনি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা বলে আসছেন, পেলেন কি?
কায়সার: প্রধান নির্বাচন কমিশনার কুমিল্লায় এসে যেসব আশার বাণী শুনিয়ে ছিলেন, এর বাস্তবায়ন দেখার অপেক্ষায় আছি। সুষ্ঠু নির্বাচন ইসি করতে পারবে এটা এখনও বিশ্বাস করি, আশা তো এখনও করি- প্রশাসন ইচ্ছা করলে সব পারে। এর পরও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা তো আছেই।
মন্তব্য করুন