চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজারে ভয়াবহ পাহাড় ধসে সেনাসদস্যসহ ১৬০ জন নিহতের পাঁচ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ সোমবার। প্রতিবছর ভয়াল স্মৃতির দিনটি ফিরে এলেও থামেনি পাহাড়ের পাদদেশে মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস; বরং গত পাঁচ বছরে বসবাসকারীর সংখ্যা বেড়েছে। জেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে সাইনবোর্ড টানানো এবং সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলেও বাসিন্দারা কেউই ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে চান না।

সংশ্নিষ্টরা জানান, প্রশাসন রাঙামাটি শহরের শিমুলতলী, রূপনগর, আউলিয়ানগর, মুসলিমপাড়া, পোস্ট অফিস কলোনি, নতুন পাড়া, লোকনাথ ব্রহ্মচারী মন্দির এলাকা, সনাতনপাড়া, চেঙ্গীমুখ, পুরাতন বাসস্টেশন, মাতৃমঙ্গল এলাকা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে রাঙামাটি পৌরসভাসহ ১০ উপজেলায় ১৫ হাজারের বেশি মানুষ ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। শুধু সদর উপজেলার ছয় ইউনিয়নে ৭৫০ পরিবারের প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ পাহাড়ের ঢালে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন।

রূপনগর এলাকার কামরুল, ইদ্রিস ও নাসিমা বেগম জানান, ২০১৭ সালের দুর্ঘটনার পর সচেতনতা বেড়েছে। কিন্তু রাঙামাটির সব জায়গাই তো ঝুঁকিপূর্ণ। মানুষ যাবে কোথায়? এ জন্য ঝুঁকি জেনেও বসবাস করেন বলে জানান তাঁরা।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ও আশ্রয়কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে। সচেতনতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে। বাস্তবতা হলো, মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে বেগ পেতে হয়। মানুষ সচেতন না হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।

সরকারি হিসাবে চট্টগ্রাম নগরীর ১৭টি পাহাড়ে প্রায় ৮৩৫ পরিবার অবৈধভাবে বসবাস করছে। এর মধ্যে ব্যক্তিমালিকানাধীন ৫৩১ ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মালিকানাধীন পাহাড়ে ৩০৪টি পরিবার রয়েছে। পরিবেশবিদদের অভিযোগ, পাহাড়ে অবৈধ বসতি গড়ে ওঠার পেছনে রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা জড়িত।
পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নাজমুল আহসান বলেন, এসিল্যান্ডদের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারের তালিকা করে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে।