টিটু চৌধুরী। দিনভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষকে বন্যার সতর্ক করেছেন। দিয়েছেন বিভিন্ন এলাকার বন্যা পরিস্থিতির তথ্য। সর্বশেষ শনিবার বেলা ১১টা ১৪ মিনিটে তিনি তার ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে সিলেট ছাড়তে রেলস্টেশনে মানুষের হিড়িক এমন একটি সংবাদ শেয়ার করেছিলেন। তার এক ঘণ্টা আগেই বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়ঙ্কর অবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে সবাইকে সতর্ক করেন। তার সতর্কতায় অনেকের উপকার হলেও রক্ষা পাননি তিনি। বন্যার পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তার। 

জানা যায়, সিলেট নগরীর টিলাগড়ের শাপলাবাগ আবাসিক এলাকায় শনিবার সকালে বন্যার পানিতে টিটু চৌধুরীর বাসা প্লাবিত হয়। পরিবারের সদস্যদের নিরাপদে সরাতে পারলেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। টিটু চৌধুরীকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লা উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে গত দুই দিনে বহুবার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সবার সহযোগিতা চাচ্ছিলেন টিটু চৌধুরী। এর মধ্যে সিলেট শহরের বিভিন্ন জায়গায় পানি বেড়ে যায় এবং এসব এলাকার মধ্যে শাপলাবাগও রয়েছে। পানি বাড়তে থাকায় বৃদ্ধ মাকে নিয়ে বাসা ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। তার বাসার সামনেই বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছিল। বাসা ছাড়ার আগ মুহূর্তে বাসার ভেতরে পানিতে দাঁড়িয়ে টিভির সুইচ খুলে রাখার সময়ই বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যান টিটু চৌধুরী।

এদিকে তার মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন অনেকে। এর মধ্যে একজন সামাজিক সংগঠন ‘টিম ৭১’- এর সদস্য ইয়াসির আরাফাত রুবেল। রুবেল তার ফেসবুকে লিখেছেন ‘আহারে! টিটু চৌধুরীর নিজ উপজেলা শাল্লায় যাওয়ার কথা ছিল আজকে- টিম ৭১ এর। টিম হয়তো পৌঁছে গেছে। ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে ত্রাণসামগ্রী। উদ্ধার কাজ চলবে আনাচে-কানাচেতে। শুধু শূন্যতা টিটু চৌধুরীর সার্বিক নির্দেশনার। হে মহান প্রভু-টিটু ভাইকে উত্তম প্রতিদান দিন। ’