ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ শিক্ষার্থীকে নিয়ে সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজার সংলগ্ন সুরমা নদীর চরে আটকে যাওয়া নৌযানটি অবশেষে ছাতক বাজারের ঘাটে এসে নোঙর করেছে। রোববার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তারা সেখানে পৌঁছেন।

এখন তারা মোটামুটি নিরাপদ অবস্থায় আছেন বলে জানিয়েছেন আটকে পড়া শিক্ষার্থীদেরই একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শোয়াইব আহমেদ।

তখন তিনি সমকালকে বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীসহ ১০০ জনকে নিয়ে আসা লঞ্চটি ১০ মিনিট আগে ছাতক বাজারের ঘাটে নোঙর করেছে। সবাই লঞ্চে অবস্থান করছি। জায়গাটা মোটামুটি নিরাপদ। সেনাবাহিনীর একজন মেজরের সঙ্গে কথা হয়েছে। ভোরের আলো ফুটলেই তিনি উদ্ধারকারী বোট নিয়ে আমাদের কাছে পৌঁছাবেন বলে জানিয়েছেন।

এর আগে আটকে পড়া নৌযানটি বহু প্রচেষ্টার পর রাত আড়াইটার দিকে দোয়ারাবাজারে এসে পৌঁছে। কিন্তু সেখানে বন্যায় নোঙর করার মতো কোনো জায়গা পাওয়া যায়নি। তাই নামতে পারেননি কেউ। শেষে লঞ্চ নিয়ে ছাতকের দিকে আগানোর সিদ্ধান্ত হয়। দুই ঘণ্টা পর তারা ছাতক পৌঁছান।

গত ১৪ জুন পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকা অবস্থায় সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওড় ভ্রমণে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২১ জন শিক্ষার্থী। ১৬ জুন সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে শিক্ষার্থীরা কোনোমতে সুনামগঞ্জ শহরের পানসী রেস্টুরেন্টে গিয়ে আশ্রয় নেন। অচেনা জায়গায় সংকটপূর্ণ অবস্থায় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন তাদের উদ্ধার করে জেলা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে আসে।

সেখান থেকে শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে ‘কপোতাক্ষ-অনির্বাণ ট্যুরিস্ট বোট’ নামে একটি নৌযানে করে তাদের সিলেটের উদ্দেশে পাঠায় জেলা প্রশাসন। তাদের সঙ্গে আটকে পড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও শিক্ষার্থীকে যোগ করা হয়। সবমিলে তারা ১০০ জন হন। দুইজন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন নৌযানে। রওনা হওয়ার পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রবল স্রোত এবং বৃষ্টিতে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সুনামগঞ্জের চরে আটকে পড়ে যানটি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহমেদ সুনামগঞ্জ প্রশাসন এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। কিন্তু পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় সেনাবাহিনী তাদের রাতের বেলা উদ্ধারের চেষ্টা করেও ফিরে আসতে বাধ্য হয়।

এদিকে সকাল ৬টা নাগাদ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী টিম সেখানে পৌঁছেছে। শিক্ষার্থীরা এখন সিলেট ক্যান্টনমেন্টের পথে আছেন। সেখান থেকে তাদের ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।