- সারাদেশ
- এবার নাসিরনগরেও বন্যা
এবার নাসিরনগরেও বন্যা

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সড়ক। নাসিরনগরের থানবাগ ইউনিয়নের আতুকুড়া কমিউনিট ক্লিনিকে তাই বন্ধ হয়ে গেছে স্বাস্থ্যসেবা। ছবি- মুরাদ মৃধা/সমকাল
ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে ফুঁসে হয়ে উঠেছে মেঘনা; যার প্রভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরেও এবার বন্যা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক, বুড়িশ্বর, নাসিরনগর, ভলাকুট, কুন্ডা, ধরমন্ডল ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জনপদ পানিতে তলিয়ে গেছে। কিছুদিন আগেই বোনা আমন ধান তলিয়ে গেছে তিন চার ফুট পানিতে।
উপজেলা সদর, ভলাকুট ও ফান্দাউক ইউনিয়নের তিনটি কমিউনিটি ক্লিনিক পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। এতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হবে বলে ধারণা করছে উপজেলা স্বাস্থ্য অফিস।
নাসিরনগর উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, এ বছর নাসিরনগর উপজেলায় মোট ১০ হাজার ৭৫ হেক্টর বোনা আমন ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ভলাকুটে ১ হাজার হেক্টর, চাতলপাড়ে ৭৫ হেক্টর, কুন্ডায় ১২০০ হেক্টর, নাসিরনগর ১ হাজার ২০০ হেক্টর, বুড়িশ্বরে ১ হাজার ৪৮০ হেক্টর, ধরমন্ডলে ১ হাজার হেক্টর ও ফান্দাউকে এক হাজার ৪১৫ হেক্টর বোনা আমন ধান চাষ করা হয়েছে।
এসব ধান তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে। এছাড়া ১ হাজার হেক্টর পাট ক্ষেত ও সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
ধরমন্ডল ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিক মিয়া বলেন, আমার এলাকায় প্রায় ১ হাজার হেক্টর বোনা আমন ধান আছে। যার সবই পানিতে ডুবে আছে। এখন পর্যন্ত কৃষি অফিসের কোনো লোকের দেখা মেলেনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাইদ তারেক বলেন, উজানের পানির কারণে সৃষ্ট বন্যায় নাসিরনগরের বোনা আমন প্রায় ২ হাজার হেক্টর ধানি জমি পানির নিচে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।
বন্যার পানির তোড়ে শনিবার রাতে বুড়িশ্বর ইউনিয়নের চানপাড়ায় ব্রিজ ভেঙে গেছে। এতে ওই গ্রামের সঙ্গে উপজেলা সদরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. অভিজিৎ রায় সমকালকে জানান, নাসিরনগরের ১৩টি ইউনিয়নের জন্য ১৩টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেন রোববার এই মেডিকেল টিমের কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোনাব্বার হোসেন বলেন, আমরা বন্যা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করছি, কোনো মানুষ সেবা বঞ্চিত হবেন না।
বানের পানিতে সিলেট অঞ্চলের অন্তত অর্ধকোটি মানুষ বন্দি। উপদ্রুত অঞ্চলে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী। তবে বিপন্ন মানুষের জন্য সরকারের ত্রাণ তৎপরতা অপ্রতুল। সহায়সম্বল সব হারিয়ে বহু মানুষের দিন কাটছে খেয়ে না খেয়ে। চিকিৎসাসেবায় ঘটেছে বিঘ্ন।
সবচেয়ে দুর্বিপাকে সুনামগঞ্জ। পুরো জেলা ডুবে থাকায় প্রকৃত খবর জানার মাধ্যমগুলো স্তিমিত হয়ে আসছে। মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানুষ তাদের দুর্ভোগের কথা জানাতে পারছে না কাউকে। এতে দেশের অন্য প্রান্ত ও বিদেশে থাকা স্বজনরা সময় কাটাচ্ছেন উৎকণ্ঠায়। সরকারের জরুরি পরিষেবাও অনেকটা অচল।
কয়েকটি স্থানে ইউএনও, ওসিসহ প্রশাসনের গুরুত্বপূূর্ণ ব্যক্তিদের ফোনও কাজ করছে না।
বন্ধ হয়ে গেছে ট্রেন ও বাস চলাচল। উড়ছে না উড়োজাহাজও।
মন্তব্য করুন