টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ৩ দিন ধরে জামালপুরের বকশীগঞ্জের ধানুয়া-কামালপুর স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। ফলে ভারত থেকে আসছে না পাথর, ভুট্টা, আদাসহ মসলাজাতীয় পণ্য। কাজ না থাকায় বেকায়দার পড়েছেন বন্দরে কাজ করা প্রায় ৩ হাজার নারী-পুরুষ শ্রমিক। এই সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়বে বন্দরের ব্যবসায়ীরাও।

ধানুয়া-কামালপুর স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়ে থাকে। দেশের সিকিভাগ পাথরের চাহিদা পূরণ হয় এই বন্দরের পাথর দিয়ে। দৈনিক প্রায় ৫০/৬০টি গাড়ি এই বন্দর থেকে মালামাল দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে থাকে। এতে প্রতিদিন সরকারের লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়। মালামাল লোড-আনলোডিং ও ক্রাশ করতে প্রায় ৩ হাজার নারী-পুরুষ শ্রমিক কাজ করেন বন্দরে।

কিন্তু কয়েক দিনের বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে স্থলবন্দরে পানি ঢুকে পড়েছে। এছাড়া ভারতে কিছু কাঁচা রাস্তা পানিতে তলিয়ে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে করে ৩ দিন ধরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় বন্দরের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। অলস সময় কাটাচ্ছেন শ্রমিকরা। এতে করে বেশি বিপাকে পড়েছেন দৈনিক হাজিরায় কাজ করা শ্রমিকরা। সংসারে অভাব অনটন দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্থলবন্দরের বেশির ভাগ জায়গাজুড়ে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নেমে আসা পানি জমে আছে। কাজ কর্ম নেই বললেই চলে। তবে আগের আসা কিছু পাথর ক্রাশিং করছেন ১০/১২ জন শ্রমিক। শ্রমিক না থাকায় বন্দরে হোটেল ও দোকানপাটগুলোও বন্ধ রয়েছে।

বন্দরে কাজ করা শ্রমিক নবীজল হক, ইদ্রিস আলী, শামীম মিয়া, ফিরোজ আলম ও জাহানারা বেগম জানান, তিন দিন ধরে বন্দরের কাজ বন্ধ। দিন হাজিরায় কাজ করে সংসার চালাই আমরা। তাই কাজ না থাকায় বেকার বসে আছি।

ধানুয়া -কামালপুর স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি কৃষিবিদ আবদুল্লাহ আল মোকাদ্দেছ রিপন জানান, অতি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণেই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তা ভালো না থাকায় ভারতীয় ব্যবসায়ীরা পাথর পাঠাচ্ছেন না। আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়; তেমনি সরকারও অনেক টাকা রাজস্ব হারায়।

কামলপুর স্থলবন্দরের সিপাই রফিক সরকার সজিব জানান, এটা সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত না। অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বন্দরে পানি ঢুকেছে এবং রাস্তা তলিয়ে গেছে। এছাড়া ভারতের সীমানায় কিছু কাঁচা রাস্তা বৃষ্টির কারণে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই ভারতের ব্যবসায়ীরা পাথর পাঠাচ্ছেন না। যোগাযোগ করা হচ্ছে। আবহাওয়া ভালো হলেই আমদানি-রপ্তানি শুরু হবে।

ধানুয়া-কামালপুর স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীরের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।