ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, বরকলসহ বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সেই সঙ্গে পাহাড়ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় ঝুঁকিতে থাকা লোকজনের জন্য ২০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়। সাতটি কেন্দ্রে লোকজন আশ্রয় নিয়েছেন।

গত তিন দিনের ভারি বর্ষণ এবং সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঘাইছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। কাচালং নদীর পানির উচ্চতা বাড়ায় বাঘাইছড়ি পৌর এলাকা, আতমলী, রূপকারী ও বঙ্গলতলী ইউনিয়নের আশপাশের প্রায় ১০টি এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। প্রায় ৩০০ মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন। আকস্মিক বন্যায় ওই এলাকার মাছের ঘের ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খোলা আশ্রয়কেন্দ্রে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড মাস্টারপাড়া, পুরান মারিশ্যা, মধ্যমপাড়ার লোকজন আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া উজানের ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে কাপ্তাই, বিলাছড়ি, রাঙামাটি সদর, নানিয়ারচর, লংগদুসহ বিভিন্ন উপজেলার নিচু এলাকা তলিয়ে গেছে।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, 'সম্ভাব্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা সতর্কতার সঙ্গে প্রস্তুত রয়েছি। উপজেলার সব কটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বন্যার্তদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।'

টানা বর্ষণে পাহাড়ধসের শঙ্কা থাকায় রাঙামাটি সদরে পাহাড়ের পাদদেশে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে সতর্ক করতে মাইকিং করেছে জেলা প্রশাসন। খোলা হয়েছে ২০টি আশ্রয়কেন্দ্র। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশন উপকেন্দ্র, বিএম ইনস্টিটিউট, লোকনাথ মন্দির, শহীদ আব্দুল আলী একাডেমি, রানী দয়ামীয় উচ্চ বিদ্যালয়সহ সাতটি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন ঝুঁকিতে থাকা লোকজন।

জেলায় দুর্গতদের সহায়তায় প্রাথমিক পর্যায়ে দেড়শ টন চাল এবং নগদ ৫ লাখ টাকা তাৎক্ষণিক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ভারি বৃষ্টিতে শহরের রিজার্ভবাজার এলাকার প্রধান সড়ক, পাবলিক হেলথ এলাকা, তবলছড়ি, রূপনগর, ভেদভেদিসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাট ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান বলেন, রাঙামাটি সদরসহ জেলায় সম্ভাব্য পাহাড়ধস মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতিমূলক সর্বাত্মক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, শহরের ২৯টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।