- সারাদেশ
- বোরকা পরে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রী-শাশুড়িসহ তিনজনকে কুপিয়ে হত্যা
বোরকা পরে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রী-শাশুড়িসহ তিনজনকে কুপিয়ে হত্যা

ঘাতক মিন্টু মিয়া
শ্যালকের বিয়েতে দাওয়াত না পেয়ে বোরকা পড়ে শ্বশুর বাড়ি গিয়ে স্ত্রী-শাশুড়িসহ তিনজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন মিন্টু মিয়া নামে এক ব্যক্তি। এসময় স্বজনদের বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছে আরও দুজন। বৃহস্পতিবার রাতে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের পটল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের মনু মিয়ার স্ত্রী শেফালী বেগম (৫০), তার মেয়ে মনিরা বেগম (৩৫) এবং মনিরার চাচা আলহাজ্ব মাহমুদ (৬৫)। এসময় স্বজনদের বাঁচাতে গিয়ে মনু মিয়া তার ছেলে শাহাদত হোসেন ও নিহত মাহমুদের স্ত্রী ছাহেরা বেগম (৫২) গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শ্রীবরদী গেরামারা গ্রামের হাইমুদ্দিনের ছেলে পেশায় হাঁস-মুরগী বিক্রেতা মিন্টু মিয়ার (৪০) সঙ্গে প্রায় ৮ বছর আগে মনিরা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। সাত-আটদিন আগে মনিরার ভাই শাহাদতের বিয়ে হয়। ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে মেয়ের জামাইকে দাওয়াত করেননি মনু মিয়া। এ নিয়ে ভীষণ রেগে যান মিন্টু মিয়া। রাগে-ক্ষোভে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে তিনি বোরকা পড়ে ধারাল দা নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে প্রবেশ করেন। বাড়িতে ঢুকেই তিনি শাশুড়িকে কোপাতে থাকেন। তার চিৎকার শুনে মনিরা এগিয়ে এলে তাকেও কোপান মিন্টু। এরপর কায়দায় মনিরার চাচা মাহমুদকেও আক্রমণ করেন তিনি। এমন আকস্মিক ঘটনায় হতভম্ব হয়ে পড়েন বাড়ির লোকজন। তারা মিন্টুকে বাধা দিতে এলে তাদের উপর হামলা করে পালিয়ে যায় মিন্টু।
তাদের চিৎকার শুনে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে সবাইকে উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং বাকিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও মনু মিয়ার ছোট মেয়ে দিনারা বেগম (২৬) জানান, দুলাভাই প্রথমে আমার আম্মাকে কোপ দেয়। আব্বা এগিয়ে আসলে তারেও কোপ দেয়। এরপর মনিরা বুবুকে মেরে জ্যাঠাকে (চাচা) কোপাতে শুরু করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শ্রীবরদী থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস সমকালকে জানান, নিহত তিনজনের মরদেহ সুরৎহাল করা হয়েছে। যেহেতু বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের ভর্তি দেখানো হয়েছে, এজন্য শুক্রবার জামালপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা মোটামুটি নিশ্চিত মিন্টু মিয়াই এমন নৃশংস হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করুন