- সারাদেশ
- প্রসূতি ও নবজাতককে আটকে অতিরিক্ত বিল আদায়
প্রসূতি ও নবজাতককে আটকে অতিরিক্ত বিল আদায়

হেলথ রিসোর্ট হাসপাতাল-সংগৃহীত
নারায়ণগঞ্জ নগরের চাষাঢ়া বালুরমাঠ এলাকার একটি ক্লিনিকে এক প্রসূতি ও তার নবজাতক সন্তানকে আটকে রেখে অতিরিক্তি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
গত রোববার দুপুরে ওই প্রসূতি সিজারের জন্য নগরের বালুরমাঠ এলাকায় হেলথ রিসোর্ট হাসপাতালে ভর্তি হন। সেদিনই তাঁর সিজারের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তান হয়।
তাঁর স্বামী ব্যবসায়ী আলী হায়দার সুমন বলেন, গত বুধবার দুপুরে তিনি স্ত্রী ও সন্তানকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য ক্লিনিকের কাউন্টারে গেলে তারা তাঁকে ৫৪ হাজার ৮০০ টাকার একটি বিল ধরিয়ে দেয়। এতে তিনি হতবাক হয়ে পড়েন। তখন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে এ নিয়ে আপত্তি জানালে তারা বিল পরিশোধ ছাড়া প্রসূতি ও নবজাতককে নেওয়া যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। এভাবে ৩ ঘণ্টা কেটে যায়। পরে বুধবার বিকেলে ৩৯ হাজার টাকা পরিশোধ করে তিনি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাড়ি ফেরেন।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সুমন আরও জানান, তার স্ত্রী নীলিমা আক্তার সন্তান সম্ভবা হলে নগরের চাষাঢ়ায় পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে স্যার সলিমউল্লাহ মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড মিটফোর্ড হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. পারুল আক্তারের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। এর আগেও ২০২২ সালে সুমনের প্রথম ছেলে সন্তানও ডা. পারুলের হাতেই জন্ম নিয়েছে।
তিনি বলেন, সবকিছু স্বাভাবিক থাকলেও গত রোববার ডা. পারুল তাঁকে নগরের হেলথ রিসোর্ট হাসপাতালে নীলিমাকে দ্রুত ভর্তি করতে বলেন। সেখানে সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানো হবে বলে জানান। সেদিন দুপুর ১টার দিকে স্ত্রীকে নিয়ে ওই হাসপাতালে যান সুমন।
হাসপাতালের লোকজন ডা. পারুলের সঙ্গে সবকিছু আলাপ করে ১৫ হাজার টাকা অগ্রিম দিতে বলেন। অগ্রিম টাকা দেওয়ার পর তাঁর স্ত্রীকে ইনজেকশন দিয়ে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হাসপাতালের লোকজন জানায়, ডা. পারুল ঢাকায় এক মিটিংয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় তিনি অস্ত্রোপচার করতে পারবেন না। অন্য ডাক্তার দিয়ে অপারেশন করা হবে। হাসপাতালের লোকজনের কথায় তখন রাজি হওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিল না।
হেলথ রিসোর্ট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক আব্দুল মান্নান মোল্লা বলেন, ডা. পারুল আক্তারেরই অপারেশন করার কথা ছিল। তিনি আসতে না পারায় আরেকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. নুর-ই-নাজমা লিমাকে দিয়ে অপারেশন করানো হয়।
রোগীকে হাসপাতালে এনে তাঁর অস্ত্রোপচার না করা এবং অতিরিক্ত বিল করার বিষয়ে জানতে স্যার সলিমউল্লাহ মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড মিটফোর্ড হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. পারুল আক্তারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। একই নম্বরে খুদেবার্তা পাঠানোর পরও তিনি সাড়া না দেওয়ায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আবুল জাহের মো. মশিউর রহমান বলেন, বেসরকারি হাসপাতালের কোনো রেট নির্ধারিত নেই। এ ক্ষেত্রে রোগী ক্লিনিকে ভর্তি হওয়ার আগেই টাকা-পয়সার বিষয়টি মিটিয়ে নিলে ভালো হয়। কারণ বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকের খরচের বিষয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই।
মন্তব্য করুন