- সারাদেশ
- 'টার্গেট কইরাই সবাইরে মারছি', মিন্টুর স্বীকারোক্তি
শেরপুরে ট্রিপল মার্ডার
'টার্গেট কইরাই সবাইরে মারছি', মিন্টুর স্বীকারোক্তি

পুলিশের সঙ্গে প্রধান আসামি মিন্টু মিয়া- সমকাল
শেরপুরের শ্রীবরদীতে ট্রিপল মার্ডারের প্রধান আসামি মিন্টু মিয়া হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় শেরপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্ত্রী, শাশুড়িসহ তিনজনকে হত্যার স্বীকারোক্তিতে সে বলেছে, 'টার্গেট কইরাই সবাইরে মারছি। এ নিয়ে আমার কোনো আফসোস নেই।'
স্থানীয় গেরামারা গ্রামের হাইমুদ্দিনের ছেলে হাঁস-মুরগি বিক্রেতা মিন্টু মিয়া বোরকা পরে এসে দা দিয়ে কুপিয়ে তার স্ত্রী মনিরা বেগম (৩৫), শাশুড়ি শেফালী বেগম (৫০) ও চাচা শ্বশুর নূর মোহাম্মদ ওরফে মাহমুদকে (৬৫) হত্যা করে। এ সময় গুরুতর আহন হন শ্বশুর মনু মিয়া, শ্যালক শাহাদত হোসেন ও মাহমুদের স্ত্রী ছাহেরা বেগম (৫২)। তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মনু মিয়ার অবস্থাও সংকটাপন্ন।
এ ঘটনায় মিন্টু মিয়াকে প্রধান আসামি করে মোট চারজনের নামে মনিরার ছোট বোন মিনারা বেগম শ্রীবরদী থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
লুকিয়েছিল গাছের ডালে :পুলিশ সূত্র জানায়, হত্যার পরপরই পালিয়ে যায় ঘাতক মিন্টু মিয়া। তাকে ধরতে পুলিশের ছয়টি টিম একযোগে অভিযানে নামে। তারা শ্রীবরদী, জামালপুরের বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ এবং শেরপুর সদরের সব সড়ক সিলগালা করে দেয়। কিন্তু কোনোভাবেই মিন্টুর হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না।
এক পর্যায়ে মোবাইল ট্র্যাক করে ভোরবেলা পুরো কাকিলাকুড়া গ্রাম ঘিরে ফেলে পুলিশ। পরে দেখা যায়, একটি গাছের ডালের ওপর বসে আছে মিন্টু। তাকে বুঝিয়ে হত্যায় ব্যবহূত দা, ছুরিসহ গাছ থেকে নামিয়ে এনে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
জানা গেছে, মিন্টু বদমেজাজি। সে শ্বশুরবাড়ি থেকে দেড় লাখ টাকা যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাত। এ কারণে সম্প্রতি তার স্ত্রী বাবার বাড়িতে চলে আসেন। মিন্টু ও মনিরাদের গ্রাম পাশাপাশি।
মিন্টু পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলেছে, স্ত্রী মনিরাকে অনেক বলার পর সে তার বাড়িতে ফেরেনি। সালিশ বৈঠক করার পরও সিদ্ধান্ত মানেনি তার স্ত্রী ও শ্বশুর- শাশুড়ি। তাছাড়া তার শ্যালক শাহাদতের বিয়েতেও তাকে দাওয়াত করা হয়নি। এতে তার সম্মানহানি হয়েছে। এসব কারণে সে সিদ্ধান্ত নেয়, শ্বশুরবাড়ির সবাইকে মেরে ফেলবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ধারালো দা ও ছুরি তৈরি করে গোপনে বোরকা পরে মেয়ে সেজে সে শ্বশুরবাড়িতে যায় হত্যাকাণ্ড ঘটাতে। আট বছরের দাম্পত্য জীবনে মিন্টু ও মনিরার একটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে।
এদিকে শুক্রবার বিকেলে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি বিপ্লব।
মন্তব্য করুন